রংপুরের মিঠাপুকুরে ডাকাতি করার সময় হস্তাধস্তিতে ডাকাত দলের ছুরিঘাতে মোরশেদা বেগম বিউটি নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তার স্বামী মিজানুর রহমান (৪৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহত মোরশেদা বেগম স্থানীয় ছড়ান ডিগ্রী কলেজের লাইব্রেরিয়ান সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মিজানুর রহমান দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জ আলিম মাদ্রাসার মাওলানা শিক্ষক।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাত আনুমানিক ৪ টার সময় উপজেলার ১১নং বড়বালা ইউনিয়নের ছড়ান শালিকাদহ গ্রামে মোঃ মিজানুর রহমানের বাড়িতে এ দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের পাহারা সহ তাদের তদন্ত চলছে এবং এ চাঞ্চল্যেকর ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানাযায়, ডাকাতির সময় মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী মোরশেদা বেগম বিউটি ডাকাত দলকে বাধা প্রদান করার সময় ডাকতদলের ছুরিঘাতে স্বামী-স্ত্রী রক্তাত্ব জখম হয়। তাদের চিৎকার শুনে স্থানিয়রা এগিয়ে আসলে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। পরে আহত বিউটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

স্থানিয়রা জানান, হঠাৎ রাত ৪টার সময় মিজানুর রহমানের মা বাড়ির ভিতরে চিৎকার চেঁচামেচি করলে স্থানিয় লোকজন মিজানুর রহমান এর বাসায় প্রাচীর টপকে ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পান রক্তাত্ব জখম অবস্থায় তাদের হাত-পা বাধাঁ রয়েছে এবং বাড়ির ভিতরে সব কিছু এলোমেলো অবস্থায় ছিলো। এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবিও করেন তারা।

প্রাথমিক তদন্তের উদ্ধৃতি দিয়ে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের শালিকাদহ গ্রামে মিজানুর রহমানের বাড়ির দরজা ভেঙ্গে একদল ডাকাত ডাকাতির চেষ্টা করে। এ সময় তাদের বাধা দেয় মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী মোরশেদা বেগম বিউটি। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এসময় ডাকাতরা তাকে এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে।

তাদের চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত বিউটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আহত অবস্থায় তার স্বামী মিজানুর রহমান সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই দম্পতির একজন মেয়ে এবং একজন পুত্রসন্তান রয়েছে। ওসি আরও বলেন, নিহত গৃহবধূর মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত মিজানুর রহমান সুস্থ্য হলে ক্ষতির পরিমাণসহ মূল ঘটনা জানা যাবে।

রংপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) আবু হাসান মিয়া বলেন, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।

বার্তা বাজার/জে আই