শীতকাল মানেই আদর-চাদর জড়িয়ে রাখা শুভ্রতায় ভরা দিন। যেখানে থাকে না প্রখর রৌদ্র কিংবা মেজাজ খারাপ করা গরম। শান্ত-শিষ্ট এই ঋতুতে বিয়ের ধুম পড়তে দেখা যায়। অনেকেই বিয়ের জন্য শীত মৌসুমকেই বেশি পছন্দ করেন। তবে বিয়ের সঙ্গে শীতের যে সম্পর্কই থাকুক না কেন, বাড়তি কিছু সুবিধা রয়েছে।

তীব্র এই শীতে বিয়ে করলে পাত্রপক্ষ বা পাত্রীপক্ষ উভই পক্ষেই রয়েছে বেশকিছু সুবিধা। বাড়তি ভোগান্তি, ফুলের ঘাটতি, সাজ সজ্জা উপভোগ ও মানানসই প্রকৃতি পাওয়া যায় শীতেই। যে কারণে বিয়ের আয়োজকদের মধ্যে একটা স্বস্তি দেখা যায়।

চলুন, শীতে বিয়ের ৫টি সুবিধার কথা জেনে নিই…

> দীর্ঘ ছুটি: শুরুতেই বলে রাখা ভালো, বিয়ের জন্য কিছুদিন সময় দরকার হয়। আর বছরের শেষেই মেলে টানা ছুটি। আর নভেম্বর-ডিসেম্বরেই আগমন ঘটে শীতের। তাই নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পড়ে যায় বিয়ের হিড়িক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক অফিস-আদালতেও বছরের শেষে দেখা মেলে ছুটির। সেই ছুটির সদ্ব্যবহার করেন অনেকেই। আর ছুটির সুযোগে পরিবারের সবাই মিলেই বিয়ের আয়োজন আনন্দের সাথে করতে পারে।

> অল্প পরিশ্রম, কম ভোগান্তি: যত ছোট পরিসরেই হোক না কেন, বিয়ের আয়োজন মানেই পরিশ্রম আর ভোগান্তি। বিয়ের আয়োজনে খাওয়া-দাওয়া, প্যান্ডেল সাজানো, বরযাত্রী-কনেযাত্রী যাওয়ার মতো কাজগুলো গরমের দিনে একটু পরিশ্রম করলেই হাপিয়ে উঠতে হয়। কিন্তু শীতে এসব ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে গরমে হাঁপিয়ে ওঠার যে প্রবণতা, সেটা শীতে দেখা যায় না। বরং বিয়ের খাওয়াও হয় আরামদায়ক।

> সাজ-সজ্জায় স্বস্তি: গরম মানেই ঘাম আর অস্বস্তি। যদি সাজ-সজ্জা একটু বেশি হয় তাহলে তো কথায় নেই। কিন্তু বিয়ে হবে আর সেখানে সাজ-সজ্জা থাকবে না তা কী করে হয়! এ কারণে সাজের সঙ্গে স্বস্তি দেয় শীতকাল। গরমে-ঘামে মেকআপ গলে যায়, সমস্যা সৃষ্টি হয়। কিন্তু শীতের সময় বিয়ের সাজ আরও বেশি স্বস্তি দেয় কনেকে। একত্রে অনেক মানুষ থাকলেও ভোগান্তি মনে হয় না। বরং সবার সাজ-সজ্জা ঠিক থাকে। আলাদা আবহ তৈরি হয়।

> প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য: বিয়ে মানে ফুলের সমাহার। আর শীতকালেই পাওয়া যায় নানান রকম ফুল। ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, রজনিগন্ধা, অর্কিড, গাঁদা, গোলাপ ও জুঁই-সহ নানান টাটকা ফুল পাওয়া যায়। যা বিয়ের আয়োজনকে আরও বাড়িয়ে দেয়। সেখানে কৃত্রিম ফুলের কোনো প্রয়োজন হয় না। চাইলে পুরো বিয়ের অনুষ্ঠান প্রাকৃতিক ফুলে সাজানো যায়। তাতে বিয়ের চাকচিক্য আলাদা মর্যাদা পায়।

> তুলনামূলক খরচ কম: শীতকালে বিয়ে হলে ফ্যান চালাতে হয় না। শীতে বেশি ফল পাওয়া যায় না বলে বিয়েতে ফলের খরচ কমে যায়। শীতে দিনের দৈর্ঘ্য কম হওয়ায় বিকেলের মধ্যে আত্মীয়দের খাওয়ানোসহ সব কাজ সেরে নেয়া যায়। এতে টাকা পয়সার অপব্যবহার বা অতিরিক্ত কোনো খরচ হয় না। এছাড়া খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনেও পানীয়ের ব্যবহার কম হয়।

সব মিলিয়ে শতি ঋতু বিয়ের জন্য বেশ উপযোগী। যে কারণে প্রতি বছর শীতে একটা বিয়ের হিড়িক পড়ে। মূলত ঋতুর সাথে বিয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে স্বস্তির হিসাব করায় শীতে বেশি বিয়ে হয়।

বার্তা বাজার/জে আই