লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মীরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে জাল সনদে কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে ল্যাব অ্যাসিট্যান্ট পদে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বপ্না আক্তারের এমপিও বন্ধ রেখেছেন শিক্ষাবোর্ড। প্রতিষ্ঠানটিতে অবৈধ অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি (বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত) ও প্রধান শিক্ষক ওই নিয়োগের প্রক্রিয়া করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

কম্পিউটার অপরেটর পদে নিয়োগ পাওয়া স্বপ্না আক্তারের চাকুরী বাতিলের দাবিতে শিক্ষা অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় দুই শিক্ষানুরাগী ইব্রাহিম ও মাহবুব। এছাড়াও এই বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এর আগেও অবৈধ পন্থায় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া, এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও প্রবেশপত্র দিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া এবং প্রধান শিক্ষক কর্তৃ স্কুলের পাঠ্য বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছিলো।

স্কুল পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থীর অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২১ সালে ডিসেম্বরে দশটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে মীরগন্জ উচ্চ বিদ্যলয়কে ল্যাবের জন্য ১৭টি কম্পিউটার দেয়া হয়। ল্যাবটি পরিচালনায় জনবল না থাকায় এখনও খুব কম ব্যাবহার করা হয়। এঅবস্থায় ২০২২ সালের মে মাসে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সৃষ্টপদে একজন ল্যাব এসিস্ট্যান্ট (কম্পিউটার অপারেটর) পদে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট ট্রেডে এইচএসসি পাস ৪ প্রার্থীকে ফেল দেখিয়ে স্বপ্না আক্তারকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। ২০২২ সালের ২৯ আগষ্ট এক শিক্ষকের স্ত্রী স্বপ্না আক্তারকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে নিয়োগ এবং যোগদানপত্র দেন সভপতি ও প্রধান শিক্ষক।

নিয়োগপ্রাপ্ত স্বপ্না আক্তারের কম্পিউটার অভিজ্ঞতার সনদটি জাল এবং একারনেই তার এমপিও হচ্ছেনা গত এক বছর ধরে। এতে তাকে ল্যাবে না দিয়ে অন্য শ্রেণীতে পাঠদান করাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। এতদিন গোপন থাকলেও সম্প্রতি ওই স্কুলেরই দুই শিক্ষক তথ্য ফাঁস করলে তা প্রকাশ পায়। সোমবার (১২ জানুয়ারী) স্কুলে গিয়ে কম্পিউটার ল্যাবটি ধুলাবালি দেখা য়ায় ও শিক্ষকও পাওয়া যানি।

মোটা অংকের অর্থের লেনদেনের মাধ্যমে স্বপ্না আক্তারকে নিয়োগ বাতিল করতে শিক্ষানুরাগী ইব্রাহিম ও মাহবুব হাওলাদার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। একইসাথে তারা অভিযোগের অনুলিপির কপি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করেছেন।

এবিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করলে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসি বাকিন ভুঁইয়াকে পাওয়া যায়নি। তবে প্রধান শিক্ষক সামছুত্তাওহীদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আবার রিপোর্ট না করার জন্য শিক্ষক নেতাদের দিয়েও সুপারিশ করাচ্ছেন এপ্রতিনিধিকে। নিয়োগপ্রাপ্ত স্বপ্না আক্তারের বক্তব্যের জন্য তার মোবাইলে কল করলে তার স্বামী মনির হোসেন রিসিভ করেন। তিনি বলেন, একটা সনদপত্র ভূল ছিল। পরে ঠিক হয়ে যাবে। তাই বোর্ড এমপিও করাচ্ছেনা।

নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একে সাইফুল হক বলেন, কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে একজনকে নিয়োগ দেয়া হয় । তিনি তো গত এক বছর স্কুলে চাকুরী করছেন।কিন্তু এমপিও হচ্ছেনা কেন প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেন।।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা বিনতে আমিন বলেন, লিখিত অভিযোগের অনুলিপি কপি এখনো হাতে পায়নি। অভিযোগ হাতে পেলে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করা হবে।

বার্তাবাজার/এম আই