বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনসার পদায়নের জোর দাবী জানিয়েছেন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা। সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ সেবাদানকারীদের উপর নারকীয় হামলা, সরকারি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি বিভাগসহ অন্যান্য সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর ও বিনষ্টকরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আয়োজিত বিক্ষোভ ও মানববন্ধন থেকে তিনি এই দাবি জানান।

এসময় ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর নির্মমভাবে আঘাত করা হয়েছে। এসময় ভাংচুর করা হয়েছে হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার জিপ গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি জনস্বার্থে যে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করা হয় সেটিকেও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আমাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছি। পাশাপাশি, বাংলাদেশের সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনসার পদায়নের জোর দাবী জানাই।

ডা. হুদা আরও বলেন, এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার, স্বাস্থ্য সেবা অধিকার- সেটা বাস্তবায়নের জন্য এদেশের সকল উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো একযোগে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা জেনে খুশী হবেন, এখন প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বাংলাদেশের মানুষের আস্থার স্থানে পরিণত হয়েছে। যেখানে মানুষের সহমর্মিতা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা থাকার কথা, আজ সেখানে মানুষ হামলা করছে! একবার ভেবেছেন- যে স্বাস্থ্যকর্মী আপনাদের সেবা দেয়, তাকেই আঘাত করছেন?

সায়েমুল হুদা বলেন, মানুষ মারা গেলে যেখান থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নিতে হয়, সেই সেই ডেথ সার্টিফিকেট দিলে যদি হাসপাতাল ভাংচুর করা হয়,
চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রমন করা হয়- এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? আমরা সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করি। যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত সেসব দুষ্কৃতিকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানাই।

বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল চিকিৎসক, মেডিকেল কনসালটেন্ট, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীগণ অংশ নেন।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪ নম্বর বাংলাবাজার রাংপানি এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চার ছাত্রলীগ কর্মী আহত হন। তাদের জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। সেখান থেকে আহতদের সিলেটে আনতে অ্যাম্বুলেন্স চেয়ে না পেয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বাগবিতণ্ডা হয়। এর জেরে মধ্যরাতে উত্তেজিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয় একটি অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতালের আসবাবপত্র এবং জরুরি বিভাগের বিভিন্ন সরঞ্জাম। আগুন দেওয়া হয় একটি সরকারি জিপে। পরে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনলে চার জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

বার্তাবাজার/এম আই