সাতক্ষীরা শহরে এক যুবক নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করতেন প্রতারণা। নামে, বে-নামে একাধিক আইডি ও অন্যের নামে মোবাইল সিম ব্যবহার করে গড়ে তোলেন প্রতারণার সাম্রাজ্য। বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলত সে।

পরে তাদের কাছ থেকে ভিডিও কলে বা হোয়াটসএ্যাপ-ম্যাসেঞ্জার-টেলিগ্রাফে ন্যুড ছবি সংগ্রহ করতেন। এভাবে একাধীক নারীকে ফাঁদের ফেলে জিম্মি করে রেখেছিল সাতক্ষীরায় মারুফ হোসেন বাপ্পী (২৬) নামের এক যুবক। অবশেষে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে ওই যুবক। আটককৃত যুবক সাতক্ষীরা পৌর এলাকার মুনজিতপুর গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে। সম্প্রতি সদর থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন এক শিক্ষার্থীর বাবা।

এদিকে, মামলার সুত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। পুলিশ (১৩ জানুয়ারি) তাকে ধরতে ফাঁদ পাতে । একপর্যায়ে প্রতারণার শিকার জনৈকা নারীর মাধ্যমে উত্তর কাটিয়ার ঈদগাহ ময়দানে ডেকে আনা হয় বাপ্পীকে। পুলিশ সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন। তার কাছে থাকা দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করে তা থেকে একাধিক নারীর অশ্লীল ছবি উদ্ধার হয়।

পুলিশ পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইনের মামলায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করে সাতক্ষীরা সদর থানা নিয়ে আসলে বেরিয়ে আসে আরো অনেক তথ্য।

সাতক্ষীরা সাইবার ক্রাইম এলার্ট টিমের এডমিন শেখ মাহবুবুল হক জানান, মারুফ হোসেন বাপ্পী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে তাদের কাছ থেকে ভিডিও কলে বা হোয়াটসএ্যাপ-ম্যাসেঞ্জার-টেলিগ্রাফে ন্যুড ছবি সংগ্রহ করতেন।

সুবিধামতো সময়ে তাদেরকে ছবি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। কখনও কখনও তাদেরকে শয্যাসঙ্গী হতে বাধ্য করতেন। সম্প্রতি দেশের স্বনামধন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী তার খপ্পরে পড়েন। সপ্তাহ দুয়েক আগে ওই ছাত্রীর পিতা সাতক্ষীরা সদর থানায় প্রতিকার চেয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে মাঠে নামে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃত বাপ্পী ডা. আরমান হোসন নিলয় হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নারীদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ধারণ করে পরে তাদের সাথে প্রতারণা করতেন। কখনও অর্থ হাতিয়ে নিতেন, আবার কখনও শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করতেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে বাপ্পীর বিরুদ্ধে ২০১২ সালে প্রণিত পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮(১)/৮(৫)(ক) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাপ্পিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

বার্তাবাজার/এম আই