সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা-১৯ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুত এলাকায় ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি বার্তা দেন তিনি।

এসময় মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করবো। আমি আজকের এই সংবাদ সম্মেলন থেকে একটি ম্যাসেজ দিতে চাই, সাভারের ব্যাংক টাউন, ব্যাংক কলোনি এবং বেদে পল্লী এলাকায় যারা সন্ত্রাস এবং চাঁদাবাজি করেছেন, যারা মানুষের বাড়িঘর নির্মাণের জন্য নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের নামে অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন, তারা আজকে থেকেই সাবধান হয়ে যান। আমি কিন্তু কাউকে ছাড় দেবো না। আমার সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই, তারা ধারণা নিয়ে নেন। আমি এমন একজন মানুষ, আমি আমার জীবনে কোনো অন্যায়কারী এবং সন্ত্রাসীর সাথে কম্প্রোমাইজ করি নাই এবং করবোও না। আপনাদেরকে আমি সাবধান করে দিচ্ছি, বিভিন্ন ফুটপাত থেকে এবং অটোরিকশা থেকে যারা চাঁদা নেন- আমি চাই আজকে থেকেই চাঁদা নেওয়া বন্ধ করুন। যদি না করেন, কালকে থেকেই আপনাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তাঁর বিজয়ের পিছনে যাদের অবদান রয়েছে এব্যাপারে ঢাকা-১৯ আসনের নবনির্বাচিত এমপি জানান, ‘আমার বিজয়ের পিছনে সম্মানিত ভোটারগণের পাশাপাশি ট্রাকের সাথে যারা সম্পৃক্ত হয়ে নির্বাচন করেছেন এসকল আলোকিত মানুষের অবদান রয়েছে। এরকম অনেক ব্যক্তিবর্গ আছেন যাদের সবার নাম এইমুহুর্তে বলতে পারবো না, এদের অনেকে এখন এখানে আমার পাশে রয়েছেন। এইসব আলোকিত মানুষগুলো আমাদের সাথে একত্রে নির্বাচন করার কারণেই আমরা এই নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছি।’

এপ্রসঙ্গে মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘নির্বাচন পূর্ববর্তী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তব্যে আমি বলেছি, কোনো সন্ত্রাসীর ভোট আমার প্রয়োজন নেই। একজন প্রার্থীর এমন ঘোষণা দেওয়া বাংলাদেশে দ্বিতীয়জন পাবেন কিনা আমার সন্দেহ আছে। আমি অত্যন্ত সৎ সাহস নিয়েই এই কথা বলেছি- কোনো খারাপ মানুষের ভোট আমার দরকার নাই।’

সাভারের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষভাবে বেদে পল্লী এলাকা মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে, এব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এমপি জানান, বেদে পল্লীতে যদি কোনো মাদকের আখড়া থাকে, তা আর থাকবে না। এবিষয়ে যা যা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সব তিনি নিবেন ইনশাআল্লাহ।

ঢাকা-১৯ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হয়ে এখন কি বিরোধী দলে যাবেন নাকি সরকারি দলে অবস্থান করবেন গণমাধ্যমকর্মীদের এই প্রশ্নের উত্তরে সাভার-আশুলিয়ার নবনির্বাচিত এমপি জানান, ‘আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আশুলিয়া থানার সাধারণ সম্পাদক। আমি আওয়ামী লীগের সাথেই থাকবো এবং আমি সরকারি দলের এমপি হিসাবে সংসদে যেতে চাই।’

বর্তমান নির্বাচনের সময় অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে সংগঠনের বাহিরের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন, তাদেরকে নিয়ে কী ভাবছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগ করে, রাজনৈতিক ভাবে তাদের নৌকার পক্ষে থাকাটাই স্বাভাবিক ছিলো। ঈগলের প্রার্থী কিন্তু আওয়ামী লীগের কোনো দলীয় সদস্য না, তার আওয়ামী লীগে কোনো পদ নাই। তাই যারা নৌকার পক্ষ থেকে পল্টি মেরে ঈগলে গিয়েছে এবং নির্বাচনের আগে খুব বাজে মন্তব্য এবং কটু কথা বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সংবাদ সম্মেলন চলাকালে এসময় ঢাকা জেলা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাজী ইমতিয়াজ উদ্দিন, ঢাকা জেলা পরিষদের সদস্য এনামুল হক মুন্সী প্রমুখসহ আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনের আগে ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন সংগঠন এবং সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন তাদের প্রিয় ঢাকা-১৯ আসনের নবনির্বাচিত এমপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে।

বার্তাবাজার/এম আই