পেশাদারিত্বের পঁয়তাল্লিশ বছরের ইতিহাসের ত্রিশ বছর তার পরিচিতি ছিল শুধুমাত্র এনজিও সংস্থা সীমান্তিকের চীফ পেট্রোন। আর সর্বশেষ ১৫ বছরে তাঁর নামের আগে লেগেছে অর্থনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষানুরাগী, রাজনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী সহ আরও নানা পদ-পদবি। হয়েছেন অসীম ক্ষমতার মালিকও। লোকে ভাবে তিনি যেখানেই হাত দেন যেন সোনা ফলে। অথচ সেই সোনার ভেতরে কতটা খাদ তা কেউ জানে না। যারা জানে, তারা সবাই সুবিধাভোগী অথবা তলপিবাহক।

এমনই এক মুখোশধারি ভুয়া/কথিত অর্থনীতিবিদের নাম ড. আহমদ আল কবির। যার সবই আছে শুধু একটা জিনিস নাই- সেটা হচ্ছে ‘এমপি পরিচয়’। তাই, নামের পেছনে ‘এমপি’ লাগাতে এবার তিনি সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে স্বতন্ত্র থেকে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হয়েছেন। খরচ করছেন অবৈধ পথে কামানো কোটি কোটি টাকাও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনিয়ম-দুর্নীতি আর প্রভাব রাজনীতিবিদদের নাম ভাঙিয়ে মাত্র ১৫ বছরে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন সিলেটের আলোচিত এনজিও ব্যক্তিত্ব ড. আহমদ আল কবির। তবে কিভাবে তিনি এতো অর্সথম্পত্তির মালিক হয়েছেন এ নিয়ে রয়েছে নানা কৌতুহল। একটাই প্রশ্ন- তার সম্পত্তির উৎস্য কোথায়?

১৫ বছর আগেও সিলেট শহরে তার বাসার জায়গা ছাড়া খুব বেশি স্থাবর সম্পত্তি ছিল না। আর এই কয়েকবছরে তিনি ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ – অঢেল সম্পত্তির মালিক। হয়েছেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাও। নামে-বেনামে করেছেন আরও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের তলপিবাহক হিসেবে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। দুই মেয়াদে টানা দীর্ঘ ৬ বছর তিনি রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেন।

ড. আহমদ আল কবিরের অর্থবিত্তের প্রধান সিঁড়ী ছিল ‘রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান’ পরিচয় :

পারিবারিকভাবে অসচ্ছল ছিলেন না ড. আহমদ আল কবির। তবে হঠাৎ করে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়ার প্রধান সিঁড়ী ছিল ‘রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান’ পরিচয় এবং রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া।

বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে ‘রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান’ হওয়ার পরে ব্যাংকটির একক অধিপতি হয়ে ওঠেন ড. আহমদ আল কবির। ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মী থেকে উচ্চপদস্থ শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ হয় তার হাত ধরেই। পুর্ণাঙ্গ সরকারি এই চাকরির জন্য জনপ্রতি ৮ থেকে ১০লাখ টাকা করে ঘুষ নেন তিনি। এছাড়াও ছিল, ব্যাংকঋণ বাণিজ্য। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার মাধ্যমে একেক প্রতিষ্ঠানকে হাজার কোটি টাকার লোন দিয়েছেন তিনি। এতে করে নিজে হয়েছেন অঢেল অর্থবিত্তের মালিক, আর সরকারি এই ব্যাংকটিকে নিয়ে গেছেন দেউলিয়ার পথে।

এখানেই শেষ নয়, তার রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাওয়ার পেছনে আরও রয়েছে, করোনা টেস্ট বাণিজ্য, অবৈধ পন্থায় সরকারি জমি লিজ গ্রহন, অবৈধ মানবপাচার ব্যবসাসহ সর্বোপরি ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েল কানেকশন।

চলবে…

বার্তাবাজার/এম আই