কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে খাবার পরিবেশনকে কেন্দ্র করে বারবার দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে কুবি দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগ। শনিবার দুপুরে খাবার নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ায় তারা। আবার বিকাল সোয়া ৪টায় একই বিষয় নিয়ে হাতাহাতি করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এতে দুই পক্ষের অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) হলের ৪র্থ তলায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে খাবারের টোকেন নিয়ে রবি চন্দ্র দাস ও খাবার বিতরণ দায়িত্বরতদের সাথে ঝামেলা হয়। ওই ঝামেলার সূত্র ধরেই রবিন চন্দ্র দাসকে আক্রমণ করে। রবি চন্দ্র দাস ৪র্থ তলার ওয়াশরুমে গেলে ৫ম তলা থেকে তিন-চারজন পিছন থেকে তার ওপর হামলা করে। তারা হলেন শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের উপনাট্য ও বির্তকবিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রিয়াজ, বিজ্ঞান অনুষদের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম আলভির ভূঁইয়া, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদ ভূঁইয়া ও শাহ আলম।

এ সময় একজন তার চোখে হাত দিয়ে বন্ধ করে দিলে বাকি দুইজন তাকে ৪র্থ তলা থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। ডাকাডাকি শুরু করলে তার বন্ধুরা এসে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় তারা মেজবাহ-উল শান্তের রুমে ঢুকে পড়ে। পরে প্রায় ২০ মিনটের মতো হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।

এ সময় ১৪তম ব্যাচের আজাহারুল ইসলাম এবং রাজিব সরকার ১২তম ব্যাচের সোহাগ মিয়াকে মারধর করে নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়। পরে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল টিমের দুইজন এসে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন।

৫ম তলার কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এর আগে দুপুর ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে ৫ম তলায় মেজবাউল হক শান্তর রুমে হলের ১৪তম ও ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ডেকে নেওয়া হয়। এরপরই ঘটনাটি ঘটে।

এ বিষয়ে সাবেক শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাউল হক শান্ত বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমি দুপুরের ঘটনা নিয়ে প্রভোস্ট স্যারের কথা বলতে ডরমিটরিতে ছিলাম এর কিছুক্ষণ পরে আমরা আওয়াজ শুনলে স্যারসহ আমরা দ্রুত চলে আসি।

এ বিষয়ে দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিন চন্দ্র দাস বলেন, আমি ওয়াশরুমে যাই তখন হঠাৎ করে রিয়াজ, আলভীর, জাহিদসহ কয়েকজন এসে আমাকে মারধর করে ৪র্থ তলা থেকে ফেলে দিতে চায়। আলভীর আমার পিছন থেকে চোখ চেপে ধরে আর বাকিরা এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। পরে আমি চিল্লানো শুরু করলে হলের কয়েকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের উপনাট্য ও বির্তকবিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রিয়াজ বলেন, হয়তো তিনি জামায়াত-শিবির ও বাম সংগঠনের এজেন্ডা বাস্তাবায়নের জন্য বিজয় দিবসের দিন খাবারের টোকেন নিয়ে ঝামেলা করেন। আমি, আলভীর ও জাহিদসহ ৫ম তলা থেকে নামার পথে ৪র্থ তলায় মুখ ধুতে যাই। এ সময় রবি ভাইয়ের সাথে দেখা হয় তখন তিনি আমাদের স্লেজিং করেন। পরে আমরা রবিন ভাইকে ভাই বলে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলে তখন তিনি চিল্লাচিল্লা শুরু করনে।

দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন দুপুরের অব্যবস্থপনার যে সমস্যা ছিল তা আমি রোববারের মধ্যে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। এরইমধ্যে আরেকটা ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রশাসনকে রিপোর্ট জমা দেব। ইমাম হোসাইন মাসুম কর্তৃক রবি চন্দ্র দাসকে ধাক্কা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাসুম রাগ করে উঠে বের হয়ে যায়। তখন রুমের সামনে জটলা এড়িয়ে যেতে হয়তো হাত লাগছে কি না আমি জানি না। যদি সত্যিই ঘটে থাকে তাহলে এরও আমরা ব্যবস্থা নেব।

প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা প্রক্টরিয়াল বডি প্রাধ্যক্ষকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।

বার্তা বাজার/জে আই