শীতের তীব্রতা বাড়লে উচ্চরক্তচাপ, হার্টের ব্যথা এমনকি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে। সাধারণত শীতে রক্তচাপের পরিমাণ ১২ থেকে ১৮ মিলিমিটার বাড়তে পারে। বর্তমানে দেশে অসংক্রামক রোগে যতজন মারা যাচ্ছেন তার ৩৬ শতাংশই হৃদরোগী।

শীতের প্রভাবে রক্ত উপাদানে কিছু পরিবর্তন আসে। রক্ত জমাট বাঁধার জন্য দায়ী রক্তকণিকা, প্লাটিলেট, লোহিত কনিকা, ফিব্রিনোজেন এবং কোলেস্টেরল বেড়ে যায় এ সময়। এতে রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা বাড়ে ২০ ভাগ পর্যন্ত। এর বাইরে যারা ডায়াবেটিস, হাইপারটেশনের মতো অন্য রোগে ভুগছেন তারা আছেন বেশি ঝুঁকিতে। এ সময়ে তাই তাদেরও থাকতে হবে বেশি সতর্ক। কেননা শীতে সাধারণত আমাদের শরীর উষ্ণ রাখতে হৃৎযন্ত্রকে প্রায় দ্বিগুণ কাজ করতে হয়।

হৃদরোগের কিছু লক্ষণ

বুক, পিঠ, পেট, গলা, বাঁ বাহুতে ব্যথা, ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা এবং অস্বস্তিকর অনুভূতি। শ্বাসকষ্ট হবে ও পাকস্থলীর ওপরের দিকে অসহনীয় ব্যথা হবে। মাথা হালকা লাগতে পারে।

হৃদরোগ হতে পারে জন্মগত, বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপজনিত, হৃৎপিণ্ডে স্বল্প রক্ত চলাচলজনিত কারণে। হৃৎপিণ্ডে মাংসের দুর্বলতাজনিত কারণেও হৃদরোগ হয়।

শীতকালে হৃদরোগীর করণীয়

নিয়মিত ওষুধ সেবন: হৃদরোগীরা তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করা গুরুত্বপূর্ণ। ওষুধগুলি রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য হৃদরোগ ঝুঁকির কারণগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

শরীরের তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখা: শীতকালে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ার একটি কারণ হল শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়া। তাই হৃদরোগীদের শরীরের তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখার জন্য ঘরের ভেতরেই বেশি সময় কাটানো উচিত। বাইরে বের হলে গরম কাপড় পরতে হবে। হাত ও পায়ে মোজা পরতে হবে। গোসল করতে হবে হালকা গরম পানি দিয়ে।

নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম হৃদরোগ ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তবে শীতকালে হৃদরোগীরা বাইরে বের হয়ে ব্যায়াম না করে ঘরের ভেতরেই ব্যায়াম করতে পারেন।

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হৃদরোগ ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তাই হৃদরোগীরা প্রচুর পরিমাণে ফল, শাকসবজি এবং কম চর্বিযুক্ত খাবার খেতে হবে। লবণ এবং চিনির পরিমাণ কমাতে হবে।

ধূমপান এবং অ্যালকোহল পান করা এড়িয়ে চলুন: ধূমপান এবং অ্যালকোহল পান করা হৃদরোগ ঝুঁকি বাড়ায়। তাই হৃদরোগীরা ধূমপান এবং অ্যালকোহল পান করা এড়িয়ে চলতে হবে।

শীতকালে হৃদরোগীরা নিয়মিত ডাক্তারের সাথে দেখা করতে হবে। ডাক্তার হৃদরোগের ঝুঁকি এবং লক্ষণগুলি পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা পরিবর্তন করবেন।

শীতকালে হৃদরোগীদের জন্য কিছু অতিরিক্ত সতর্কতা:

দ্রুত হাঁটার মতো হালকা ব্যায়াম শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে আপনার কার্যকলাপের স্তর বাড়ান।
আপনার শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে স্তরযুক্ত পোশাক পরুন।
বাইরে বের হওয়ার আগে বাইরের তাপমাত্রা এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস চেক করুন।
আপনি যদি শীতকালে হৃদরোগের লক্ষণগুলি অনুভব করেন তবে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা নিন।

বার্তা বাজার/জে আই