নির্বাচনের ভোট গ্রহণ প্রকৃয়ায় অন্যতম প্রধান দায়িত্ব পালন করেন প্রিসাইডিং অফিসারগণ। নির্বাচনের আগে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে নির্বাচন কমিশন। এসব প্রিসাইডিং অফিসারদেরকে প্রভাবিত করতে ট্রেনিং সেন্টারে উপস্থিত হয়ে তাদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইদ্রিস ফরাজির ভাই ইমন ফরাজির বিরুদ্ধে। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এমনটা কেউ করে থাকলে স্পষ্ট ভাবে তিনি নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন।
রোববার (১৯ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি ভাইরাল হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার শরীয়তপুরের জাজিরা সরকারি মোহর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা যায়, জাজিরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন। প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজির বিরুদ্ধে কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে ইদ্রিস ফরাজির সমার্থক ডা. ইমন ফরাজি বিভিন্ন ভাবে কাজ করছেন। সর্বশেষ তিনি প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদেরকে প্রভাবিত করতে ট্রেনিং সেন্টারে (সরকারি জাজিরা মোহর আলী উচ্চ বিদ্যালয়) গিয়ে চেয়ার টেবিলে বসে তাদের মোবাইল নাম্বারসহ ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছেন। এসব সংগ্রহ করে তিনি বিভিন্ন ভাবে প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের টাকাসহ বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এভাবে প্রভাবিত করার কারণে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসারগণ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন।
জাজিরা উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কোনো প্রার্থীর ভাইর প্রবেশের সুযোগ নেই। এমনটি কেউ করে থাকলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার বলেন, গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে নির্বাচন কমিশন। ওই ট্রেনিংয়ে হঠাৎ করে উপস্থিত হোন মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজির ছোট ভাই ডা. ইমন ফরাজি। এরপর তিনি উপস্থিত প্রশিক্ষণার্থীদের মোবাইল নাম্বারসহ ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছেন। এভাবে প্রভাবিত করতে সবার সামনে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করায় প্রশিক্ষণার্থীগণ বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণে সংশ্লিষ্ট ছাড়া অন্য কারও প্রবেশের সুযোগ নেই। যদি ওই প্রশিক্ষণে কেউ প্রবেশ করে কারও ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন, তাহলে তা সুস্পষ্ট ভাবে আচরণ বিধি লঙ্ঘন। প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।