পেটের সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং খারাপ খাদ্যাভ্যাসের কারণে ধীরে ধীরে আমাদের পরিপাকতন্ত্র দুর্বল হয়ে যায়। এ কারণে অনেকেই বদহজম, অ্যাসিডিটিসহ বিভিন্ন রকম পেটের সমস্যায় ভোগেন।
গ্যাসের সমস্যার কারণে পেট অনেক সময় ফুলে থাকে। এর মানে হলো অন্ত্র ও পেটে গ্যাস জমা হয়েছে। বাইরে থেকে বিভিন্ন রকমের ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া, মদ্যপান করা ও ধূমপানের কারণেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের মতো সমস্যা হতে পারে।
কথায় আছে, ‘পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।’ তাই পেটের যদি সমস্যা থাকে, তাহলে কোনো কাজ করেই শান্তি পাওয়া যায় না। পেটের সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এ ছাড়া চাইলেও ঘরোয়া উপায়ে এ সমস্যা দূর করা সম্ভব।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কীভাবে পেটের গ্যাস দূর করবেন—
১. পেটে ম্যাসাজ করুন। পেটে ম্যাসাজ করলে পেটের পেশীগুলি শিথিল হয় এবং গ্যাস বেরিয়ে আসতে সহায়তা করে। পেটে ম্যাসাজ করার জন্য, আপনার বাম হাতের তালু দিয়ে আপনার পেটের কেন্দ্রে রাখুন এবং ঘড়ির কাঁটার দিকে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। প্রতিটি দিকে 5-10 মিনিট ম্যাসাজ করুন।
২.গরম পানিতে গোসল করুন। গরম পানিতে গোসল করলে পেটের পেশীগুলি শিথিল হয় এবং গ্যাস বেরিয়ে আসতে সহায়তা করে।
৩.ফাইবারযুক্ত খাবার খান। ফাইবারযুক্ত খাবার হজমকে সহজ করে এবং গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ২৫-৩৮ গ্রাম ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। ফাইবারযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে ফল, শাকসবজি, ওটস, এবং বাদাম।
৪.কলা খান। কলাতে প্রচুর পরিমাণে পেকটিন থাকে, যা একটি ফাইবার যা গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি কলা খান।
পর্যাপ্ত পানি খান। পানি হজমে সাহায্য করে এবং গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন 8-10 গ্লাস পানি পান করুন।
গ্যাস উৎপাদনকারী খাবার এড়িয়ে চলুন। গ্যাস উৎপাদনকারী খাবারের মধ্যে রয়েছে শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি, পেঁয়াজ, রসুন, এবং কোমল পানীয়।
এছাড়াও, খাওয়ার সময় ধীরে ধীরে চিবাতে হবে এবং বেশি কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। খাওয়ার পর কিছুটা হাঁটাহাঁটি করলেও গ্যাসের সমস্যা কমতে পারে।
পাশাপাশি পেটে গ্যাসের সমস্যা সমাধানে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। সেগুলো হলো—
১. অতিরিক্ত মসলাজাতীয় খাবার খেলে পেটে সমস্যা হতে পারে। তাই এসব খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। আর বাইরে খেলে ঝোলজাতীয় খাবার ত্যাগ করুন। সব সময় খাবারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
২. অনেক সময় অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে গ্যাসের সমস্যা হয়। তাই যতটুকু প্রয়োজন তার চেয়ে অতিরিক্ত মাছ-মাংস, দুধ না খাওয়াই ভালো হবে।
৩. নিয়মিত শারীর চর্চা করুন। এতে পেটে গ্যাস জমার প্রবণতা কমবে। একই সঙ্গে পেটের পেশির ব্যায়াম করলেও উপকার পাওয়া যাবে।
বার্তা বাজার/জে আই