১০ দফা দাবিতে বিএনপি নতুন করে ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। সমাবেশ, মানববন্ধন, পদযাত্রার মতো কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলটি সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে যেতে চায়। বিএনপির নেতারা মনে করছেন, ধারাবাহিক কর্মসূচির মধ্যেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে, যার মধ্য দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন একলাফে নতুন পর্যায়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

বিএনপি সূত্র বলছে, তারা আন্দোলনে রাজধানী ঢাকার নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে বেশি জোর দিচ্ছে। তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনে পর্যায়ক্রমে শক্তি বাড়াবে। একই সঙ্গে বিরোধী অন্যান্য দল ও জোটকেও সঙ্গে রাখতে চায় বিএনপি।

এরই অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার ঢাকার দুই অংশে দুটি আলাদা পদযাত্রা করবে বিএনপি। একই দিন আলাদাভাবে ঢাকার আরেক অংশে একই কর্মসূচি পালন করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি বেলা আড়াইটায় গাবতলী বিউটি সিনেমা হলসংলগ্ন এস এ খালেক বাস কাউন্টারের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করবে। একই সময়ে দলটির মহানগর দক্ষিণ শাখা পদযাত্রা শুরু করবে ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন মোড় থেকে। আর গণতন্ত্র মঞ্চ পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করবে বেলা ১১টায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে। এসব কর্মসূচিতে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন।

বিএনপির অন্যান্য কর্মসূচির মতো আজকের কর্মসূচির দিনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মসূচি রয়েছে। আজ বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি থাকবেন। এরই মধ্যে ‘প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির’ প্রতিবাদে গতকাল দেশব্যাপী প্রতিবাদ, বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও সমমনা সংগঠনগুলো সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করেছে।

বিএনপি এই পর্বে ১৭ মে থেকে সারা দেশে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে। ১০টি সাংগঠনিক বিভাগের মহানগর এবং ৮১টি সাংগঠনিক জেলায় জনসমাবেশের পাশাপাশি ঢাকায় চারটি পদযাত্রা ও চারটি জনসমাবেশ কর্মসূচি দেয় দলটি। এসব কর্মসূচি চলবে ২৮ মে পর্যন্ত। কর্মসূচি সফল করতে দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুগ্ম মহাসচিবদের মাঝে ইতিমধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। শান্তিপূর্ণভাবেই আমরা কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করব।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি বেলা আড়াইটায় গাবতলী বিউটি সিনেমা হলসংলগ্ন এস এ খালেক বাস কাউন্টারের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করবে। একই সময়ে দলটির মহানগর দক্ষিণ শাখা পদযাত্রা শুরু করবে ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন মোড় থেকে।

বিএনপির উচ্চপর্যায়ের সূত্রগুলো বলছে, আন্দোলনের এই পথ ধরে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে যেতে চাইছে দলটি। এই মুহূর্তে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের লক্ষ্য ধারাবাহিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কেন্দ্র থেকে মাঠের কর্মী-সমর্থক পর্যন্ত আন্দোলনের একটি ঢেউ তৈরি করা। বিশেষ করে, গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে সারা দেশে বিভাগীয় সমাবেশ গুলোকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে রকম মরিয়া মনোভাব দেখা গেছে, আবার সে রকম আন্দোলনমুখী পরিবেশ সৃষ্টি করতে চান বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। তাঁরা মনে করছেন, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশ ঘিরে যে রকম রাজনৈতিক উত্তাপ তৈরি হয়েছিল, কোনো একটা প্রেক্ষাপটে যেকোনো সময় সে রকম একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যাবে। আর তখনই কর্মীদের সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।

বিএনপির নেতারা বলছেন, এই পর্বের আন্দোলনে তাঁরা রাজধানী ঢাকাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। চূড়ান্ত আন্দোলনে সবাইকে সর্বশক্তি নিয়ে নামাতে সাংগঠনিক নানা প্রস্তুতিও চলছে।

বার্তাবাজার/এম আই