তপশিল প্রত্যাহার, সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামার মুক্তি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ডাকা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিনে হরতাল সফলে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও পিকেটিং করছে জামায়াতে ইসলামী।

সোমবার (২০ নভেম্বর) দলটির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ও উত্তর রাজধানীর ১২টি স্পটে মিছিল করেছে।

মিছিলে নেতৃত্ব প্রদানকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মো. হাফিজুর রহমান বলেছেন, ভোট ডাকাতি করে অবৈধ পথে ক্ষমতায় বসা আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ পনেরো বছরের অপশাসন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ রাজপথে নেমেছে। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করা হবে।

তিনি বলেন, জামায়াত বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে অধিকাংশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে অধিকাংশ সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে। সারাদেশে স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিপুলসংখ্যক জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে তারা দেশ ও জাতির খেদমত করেছে। জামায়াতের মতো একটি বৃহৎ দলের বক্তব্য না শুনে নিবন্ধন সংক্রান্ত আপিল মামলাটি খারিজ করে দেওয়া একটি ‘ন্যায়ভ্রষ্ট’ রায়।

বাংলাদেশের জনগণ তপশিল প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই অবিলম্বে এই তপশিল বাতিল করুন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন।

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে নেমেছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা বাংলাদেশের সাধারণ জনগণকে নিজেদের ন্যায্য দাবি আদায়ে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাসির উদ্দীন বলেছেন, ফরমায়েশি তপশিল বাতিল ও কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথ উত্তাল হয়ে উঠেছে; গণদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ জনতা রাজপথের অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন, চলমান আন্দোলনে সরকার দিশেহারা হয়ে সরকার এখন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। তারা আবারো নৈশভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার জন্য নতুন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একতরফা তপশিল ঘোষণা করেছে। আর এই ফরমায়েশি তপশিল ঘোষণার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন প্রহসন কমিশনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু জনগণ জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক হরতাল পালন করে মাফিয়া সরকারকে না বলে দিয়েছে। দেশের গণতন্ত্রমনা ও শান্তিপ্রিয় মানুষ এই ভোট ডাকাতদের আর একমুহূর্তও ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

তিনি সরকারকে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে তথাকথিত নির্বাচনী তপশিল বাতিল ও কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। অন্যথায় গণজোয়ারে সরকারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির ঢাকার দুই মহানগরের নেতাকর্মীরা রাজধানীর শেওড়াপাড়া, কল্যাণপুর, মগবাজার, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, ভাটারা, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী, বঙ্গবাজার, শাহজাহানপুর, ডেমরা এলাকায় মিছিল ও পিকেটিং করে।

বার্তাবাজার/এম আই