নাটোরের গুরুদাসপুরে খেতের ধানবিনষ্ট করে জোরপূর্বকভাবে ইটপরিবহনের রাস্তা নির্মানের অভিযোগ উঠেছে এক ইটভাটা
মালিকের বিরুদ্ধে। পৌরসভার চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া মহল্লা গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই রাস্তা নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে।

খেতের ধান বিনষ্টের ঘটনায় ইটভাটা মালিক জাকির সোনার তাঁর ছেলে শাকিল সোনারসহ আটজনকে অভিযুক্ত করে গতকাল দুপুরে গুরুদাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী ধানখেত মালিকদের পক্ষে জিয়ারুল মন্ডল বাদী হয়ে ওই অভিযোগটি দিয়েছেন। তার পরও রাস্তা নির্মানের কাজ চলছে। গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোনোয়ারুজ্জামান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ভুক্তভোগী কৃষক জিয়ারুল মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, তাঁদের ধান খেতের পাশেই জাকির সোনারের ‘ মেসার্স এসআর বি ব্রিক্স’নামে একটিইটভাটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে তাঁদের ধান খেতের অনেকের কৃষি জমি কব্জায় নিয়েছেন ইটভাটা মালিক।

সর্বশেষ তাঁদের পরিবারের আট সদস্যের চার বিঘা কৃষি জমি ইটভাটার কাজে লিজ নেওয়ার জন্য নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছেন। ওই প্রস্তাবে রাজী হননি তাঁরা। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহষ্পতিবার সকাল থেকে ইটভাটা মালিক জাকির সোনার তাঁর লোকবল নিয়ে তাদের খেতের ধান কেটে ইটপরিবহনের রাস্তা নির্মান শুরু করেন। প্রতিবাদ করেও প্রভাবশালীদের দাপটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন তাঁরা। নিরুপায় হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেও রাস্তা নির্মানের কাজ বন্ধ করা যায়নি।

কৃষক জিয়ারুল মন্ডল আরো অভিযোগ করে বলেন, প্রভাবশালীদের দাপট থেকে খেতের ধান রক্ষায় খেতের চারপাশে বাঁশের বেড়া (বাউন্ডারী) দিলেও খেতের ধান রক্ষা করতে পারছেনা তাঁরা। অথচ ধানগাছে থোর এসেছে, আর কিছুদিন পরেই এসব ধান কাটা শুরু করবেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখাগেছে, ইটভাটার পশ্চিম পাশের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে ধান খেত। ভুক্তভোগী কৃষকদের উভয়পাশের কৃষি জমি লিজ নিয়ে সেখানে ইট তৈরির প্রস্তুতি নিয়েছেন ইটভাটা মালিক। কিন্তু ভুক্তভোগী কৃষকরা তাঁদের কৃষি জমি ইটভাটা কর্তৃপক্ষকে লিজ না দেওয়ায় জোরপূর্বক ধান বিনষ্ট করে ইটফেলে রাস্তা নির্মান করছেন ইটভাটা মালিক জাকির সোনার।

ভুক্তভোগী কৃষক জিয়ারুল মন্ডল বলেন, তাঁরা পাঁচভাই দুইবোন ও বৃদ্ধ মায়ের নামে চারবিঘা জমি। বছর জুড়ে চাষাবাদ করে সেই ফসল বিক্রি করেই কষ্টে সংসার চলে তাঁদের। কিন্তু ইটভাটা মালিকের কারনে শেষ সম্বল কৃষি জমিটি এখন টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাঁরা এই অন্যায়ের বিচার দাবী করেন তাঁরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, কৃষি জমি নষ্ট করে ইটভাটা নির্মানের আইনগত বৈধতা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইটভাটা মালিক জাকির হোসেনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর ছেলে সাকিল সোনার দাবী করেন অভিযোগকারীদের খেতের চার পাশেই অনেক জমি লিজ নিয়ে ইটভাটার কার্যক্রম চালাচ্ছেন তাঁরা। ইটভাটার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অভিযোগকারীদের সামান্য জমিতে ইট ফেলে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এজন্য তাঁদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হবে।

বার্তা বাজার/জে আই