বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা অবরোধের তৃতীয় দিনেও ঢাকার সাভারে মাঠে ছিলো আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, পুলিশ হত্যা ও সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব এর নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী সমন্বয়ে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শান্তি মিছিল ও পরে মুনসুর মার্কেট এলাকায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শান্তি মিছিলে ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: এনামুর রহমান অংশ নেন। মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ চৌধুরী, ঢাকা জেলা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সায়েম মোল্লা প্রমুখসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সমাবেশে বক্তারা জানান, বিএনপি-জামায়াত জোট সেই ২০১৩ সালের মতো অগ্নিসন্ত্রাস ও গাড়ি ভাংচুর দ্বারা দেশে এক অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরীর মাধ্যমে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। এবার তারা পুলিশ হত্যা করেছে, সাংবাদিকদের নির্যাতন করেছে। তাদের এই নৈরাজ্য প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মাঠে আছে এবং থাকবে।

এদিকে, শ্রমিক আন্দোলনের ৫ম দিনে শিল্পাঞ্চল ঢাকার আশুলিয়ায় নূন্যতম মজুরী ২৩ হাজার টাকার দাবীতে দুটি কারখানায় হামলা চালিছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এসময় কারখানার সামনে পাকিং করা একটি প্রাইভেটকার ও একটি নোয়া গাড়ীতে ভাংচুর চালায় তারা। তবে শিল্প পুলিশ বলছে পরিস্থিতি শান্ত। এছাড়া পোশাক কারখানার নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশের পাশাপাশি ১০ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আশুলিয়ার কাঠগড়া উত্তরপাড়া এলাকার ফ্যাশন গ্লোব গ্রুপের এআর জিন্স ও নাসা গ্রুপের সেইন অ্যাপালেস নামের কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ আগামী অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানা শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে কাঠগড়ার উত্তরপাড়া এলাকার ফ্যাশন গ্লোব গ্রুপের এআর জিন্সে হামলা চালায়। এসময় তারা কারখানার শ্রমিকদের বের করে আন্দোলনে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেডের পার্কিং করা একটি প্রাইভেটকার ও একটি নোয়া গাড়ীতে ভাংচুর চালায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে, বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আন্দোলনকারী কোন শ্রমিককে দেখা যায়নি। গত তিন দিনের চেয়ে পরিস্থিতি আজ স্বাভাবিক রয়েছে। তবে রাস্তার পাশের বিভিন্ন কারখানার মূল ফটকে নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়ে একদিনের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও সে সব কারখানা বৃহস্পতিবারও বন্ধ ছিলো। সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

গণমাধ্যমকে আশুলিয়া এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজিবি’র লেঃ কর্নেল রেজাউল কবির জানান, আশুলিয়ায় আমাদের ১০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আজসহ তিন দিন ধরে বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। নিয়মিত বিজিবি টহল কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সজাগ রয়েছি।

শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, গত তিন দিনের তুলনায় আজকের পরিস্থিতি ভাল। আজ অনেক ফ্যাক্টুরীতে কাজ হচ্ছে, বেসিক্যালী রাস্তার পাশের কয়েকটি বড় ফ্যাক্টুরী এখানেই ঝামেলা হচ্ছিল, এগুলো বন্ধ থাকার কারণে আজ ঝামেলা নেই। সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে পুরোপুরি ফ্যাক্টুরী চলছে। আবার কিছু কিছু ফ্যাক্টুরীতে মজুরীর দাবীতে কিছুক্ষণ কাজ করে কারখানা থেকে ছুটি নিয়ে চলে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

বার্তা বাজার/জে আই