প্রতিবছরই মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় অনেক শিক্ষার্থী। আঁচল ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে দেশে আত্মহনন করেছে ৫১৩ শিক্ষার্থী। ২০২২ সংখ্যাটা ছিল ৫৩২ জন। আর চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ১৪ মে পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন প্রায় ১৮৮ জন শিক্ষার্থী।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৪ মে পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে ১৮৮ জন শিক্ষার্থী। মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের তিনদিনেই আত্মহননের পথ বেছে নেয় অন্তত ১০ জন।

বিশেষজ্ঞদের মতে পারিবারিক চাপ, দারিদ্র, প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উসকে দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষক, লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী সঙ্গীতা ইমাম বলেন, যারা পরীক্ষা ভালো করে, তাদের নিয়ে সবাই উৎসব করে। রাষ্ট্রও তাদের নিয়ে উৎসব করে। কিন্তু যারা ঝরে গেল, পারল না তাদের জন্য বুস্টার্ব করা। কেন এরা এবার পারল না, কেন পারল না। সেগুলো নিয়ে তাদের সহযোগিতা করা। এটা কিন্তু আমাদের মধ্যে নাই।

লেখক ও গবেষক গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, যখন ঘটনা ঘটছে, তখন আমরা কথা বলছি। কিন্তু কয়েকদিন পরই থেমে যাচ্ছি। কিন্তু এটাকে স্বীকার করতে হবে যে, আমাদের একটা সামাজিক সংকট আছে।

বিশেষজ্ঞের মতে, আত্মহত্যার ঘটনা ঘটলে, পরিবারের অন্য সদস্যদেরও আত্মহননের ঝুঁকি থেকে যায়। যদিও পরিবার সহযোগিতার হাত বাড়ালেই বদলাতে পারে এই চিত্র।

মনোবিজ্ঞানী রাউফুন নাহার বলেন, পরীক্ষায় খারাপ করলে মা-বাবারা সরাসরি বলে আমরা কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না। তখন শিশু বা শিক্ষার্থীরা কিন্তু মনে করে তাদের বেঁচে থাকার কোন মানেই নাই। তবে বাইরে থেকে যতই চাপ আসুক, পরিবার ঠিক থাকলে কিন্তু এগুলো কোনো বিষয়ই না।

তবে কি দারিদ্র, প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি আর সোশ্যাল মিডিয়া সবটাই উসকে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের? নাকি সমাজ বিষণ্নতা, মানসিক চাপ কিংবা আত্মহনন প্রবণতার স্বাভাবিকীকরণের প্রক্রিয়ার পদ্ধতিগত কারণগুলো এড়িয়ে যাচ্ছে?

বার্তা বাজার/এইচএসএস