ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতনের ঘটনার পর এডিসি হারুন অর রশিদকে বরখাস্তসহ এ বিষয়ে বহুমাত্রিকে ঘটনায় মুখ খুলেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের এডিসি (ক্রাইম-১) সানজিদা আফরিন নিপা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘হারুন স্যার শুধু আমার সহকর্মীই, অন্য কোনো সম্পর্ক নেই। আমি সেদিন বারডেমে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম। নিজের এলাকা হওয়ায় হারুন স্যার চিকিৎসকের সিরিয়াল নিয়ে দিয়েছিলেন।

সন্ধ্যায় আমিই তাকে বারডেমে ডেকে নিয়েছিলাম। সেদিন আমার স্বামী প্রথমে হারুন স্যারকে মেরেছিলেন। মারতে মারতে টেনেহিঁচড়ে জাস্ট ইটিটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে আরও কয়েকটা ছেলে ছিল। তারাও রুমে এসে স্যারকে মারছিল। স্যার বলছিলেন, আমাকে মারছেন কেন, এটা ভদ্রতা নয়।’

পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে সানজিদা জানান, দু-তিন সপ্তাহ ধরে তার বুকের ব্যথা বাড়ছিল। তিনি ল্যাবএইডে যে চিকিৎসককে দেখান, তিনি দেশের বাইরে। তাই ব্যথা বাড়তে থাকায় জরুরিভাবে তিনি বারডেমে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে অফিস শেষে চিকিৎসক দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ জন্য হারুন স্যারের আওতাধীন এলাকায় ওই হাসপাতাল হওয়ায় তার সহায়তা নেন। স্যার ওসির মাধ্যমে সিরিয়াল ম্যানেজ করে দেন। সেই অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টার পর তিনি হাসপাতালে যান। গিয়ে দেখেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক কনফারেন্সে রয়েছেন। তখন তিনি ঘটনা জানালে এডিসি হারুন হাসপাতালে আসেন। তখন অন্য চিকিৎসককে দেখানোর ব্যবস্থা করলে তাকে বেশকিছু টেস্ট দেওয়া হয়।

তার স্বামীর সঙ্গে এডিসি হারুনের হট্টগোলের বিষয়ে সানজিদা আফরিন বলেন, ঘটনার সময়ে আমি ইটিটি করাচ্ছিলাম। শেষ পর্যায়ে ইটিটি কক্ষ থেকে একটা বড় ক্রাউড শুনতে পাই। চিৎকার-চেঁচামেচি কানে আসছিল। হারুন স্যার বলছিলেন, আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন কেন, আপনি তো এটা করতে পারেন না। এর পরই দেখতে পাই আমার হাজব্যান্ডকে, তিনি সেখানে কেন গিয়েছেন, কী করছিলেন, কিছুই আমি জানি না। তাকে বেশ উত্তেজিত দেখাচ্ছিল। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে ইটিটি রুমের ভেতর নিয়ে আসা হলো। স্যার বাঁচার জন্য রুমের এক কোণে গিয়ে দাঁড়ান। তখন ভেরি আনফরচুনেটলি আমার হাজব্যান্ড তার সঙ্গে থাকা দুই ছেলেকে বলছিলেন, তোরা এই দুজনের ভিডিও কর। তখন আমি ইটিটি পোশাকে ছিলাম। এটি স্বাভাবিকভাবেই শালীন অবস্থায় ছিল না। তখন হাজব্যান্ডের কাছে ঘটনা জানতে চাইলে আমাকে কয়েকটা চড়-থাপ্পড় দেয়। ভিডিও করা ছেলেদের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করি আমি। তাদের ইনটেনশন ছিল স্যারকে আমার পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে ভিডিও করতে। তারা আমার বডিগার্ডকেও মেরেছে। তখন স্যার ফোর্স খবর দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। তার স্বামী সেখানে কেন গিয়েছিলেন, তা তাকে তখন জিজ্ঞাসা করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। আমি নিবৃত করার চেষ্টা করেছি। যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, হারুন স্যারের সঙ্গে সহকর্মীর বাইরে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’

বার্তাবাজার/এম আই