ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অভিভাবকের বিরুদ্ধে এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দুপুরে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ শেষে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার শিক্ষক তানভীর আহমেদ আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এসময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে ফারুক আহমেদ ও গনেস চন্দ্র দাস নামে আরও দুজন শিক্ষক হামলার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা যায়, এবছর এসএসসি পরীক্ষায় আখাউড়া উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ফলাফল খারাপ হয়। উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গড় পাসের হার ছিল ৫৬.৩২। দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭২ জন পাস করেছে। পাসের হার ৫৪.৫৫। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে বিদ্যালয়গুলোতে অভিভাবক সমাবেশ শুরু করেছে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। মঙ্গলবার দুপুরে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন।

মারধরের শিকার ইংরেজি শিক্ষক তানভীর আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, সমাবেশে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ জন্য শিক্ষকদেরকে দোষারোপ কনে অভিভাবকরা। এসময় শিক্ষকদেরকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সমাবেশ শেষে ইউএনও স্যার অফিস রুমে গেলে সেখানে আমরা কথা বলতে চাই। কিন্তু সেখানেও আমাদেরকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। ইউএনও স্যার চলে গেলে বিষয়টি নিয়ে আমি সহকর্মীদের সাথে কথা বলছিলাম। এসময় দেবগ্রাম গ্রামের শেখ সোহেল ও জসিম উদ্দিন দেওয়ানসহ আরও একজন অভিভাবক এসে আমাকে কিল ঘুষিসহ মারধর করে। এসয়ম শিক্ষক ফারুক আহমেদ ও গনেস চন্দ্র দাস আমাকে রক্ষা করে।

মারধরের শিকার তানভীর আরও বলেন, শেখ সোহেল হুমকি দিয়েছেন আমি বিদ্যালয়ে গেলে আমার হাত পা ভেঙ্গে ফেলবে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। আমি সবার সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

এ ব্যাপারে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক ফারুক আহমেদ বলেন, তানভীর আহমেদ বলতেছিল, শিক্ষকদেরকে অপমান করার জন্য কিছু লোককে সাজিয়ে সমাবেশে আনা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা তাকে মারধর করেছে। তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক কোন ক্লাশ নেয় না। প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় অনেক ছাত্রছাত্রীকে চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এজন্যই ফলাফল খারাপ হয়েছে। এসব বিষয়গুলো বলা দরকার ছিল। কিন্তু শিক্ষা অফিসার নিষেধ করে বলেন আমাদের কিছু হবে না। প্রধান শিক্ষকই অল ইন অল।

অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ সোহেল বলেন, আমি ওই শিক্ষককে মারধর করিনি। উল্টো তিনি আমার সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। হুমকি দেওয়ার কথা সত্য নয়।

জানতে চাইলে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। পরে শুনেছি। খোঁজ খবর নিয়ে বিস্তারিত জানাবো। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল হোসেন এ ব্যপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। শিক্ষকের উপর হামলা হয়ে থাকলে ঘটনাটি দুঃখজনক।

এ ব্যপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ইউএনও অংগ্যজাই মারমাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বার্তাবাজার/এম আই