পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদাদল ও ইউট্যাব। সোমবার দুপুরে পবিপ্রবি ক্যাম্পাসের টিএসসিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পবিপ্রবি শাখার সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর। এসময় পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেকসহ অন্যান্য নেতা-কর্মী এবং বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগ সভাপতি আরাফাত ইসলাম সাগর বলেন, এগ্রিকালচার ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সিনথী কানিজকে অবৈধভাবে পাশ করিয়ে নেয়ার অনুরোধ করলে এন্টোমোলোজি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ডঃ হেমায়াত জাহান তাতে রাজি হননি এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাকে তার কক্ষে তালা বদ্ধ করেছে এমন অভিযোগ এনে সাদা দল একটি ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা বিবৃতি দেন। এরপর গত ১৬ ই আগষ্ট সাধারন শিক্ষকদের বিভ্রান্ত করে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করান। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে যে আত্মিক বন্ধন রয়েছে তাতে ফাটল ধরেছে। এবং সেখানে ছাত্রলীগকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্রের নীল নকশা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ তারা নিয়েছে। তিনি একজন শিক্ষক হয়ে কিভাবে কোনো রকম সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া বলতে পারেন ছাত্ররা উনার কক্ষে তালা দিয়েছে। কোনো কর্মচারী কিংবা বহিরাগত যে কেউ উনাকে তালাবদ্ধ করতে পারেন। ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার লক্ষ্যে উনি নিজেওতো ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিতে পারেন। এছাড়া সিনথী কানিজের কথা বলা হয়েছে, তার কোনো পরীক্ষাই ছিলোনা। এবং সিনথি যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো তাও ২/৩ মাস আগে হয়েছে। যার কোনো পরীক্ষা নাই, পাস ফেলের কোনো ব্যাপার নাই, তারসাথে ছাত্রলীগকে জড়িয়ে যে কুরুচিপূর্ণ অভিযোগ তিনি করেছেন তা কিভাবে সত্যি হতে পারে সেটা সকলের কাছে আমার প্রশ্ন রইলো।

ছাত্রলীগ সভাপতি আরো বলেন, প্রফেসর ড. হেমায়েত জাহান বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ইউট্যাবের সাধারণ সম্পাদক। তার নিয়োগ নিয়েও বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনা রয়েছে। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে কিভাবে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সেটিও একটি বড় প্রশ্ন। জামাত-বিএনপির মদদপুষ্ট অপশক্তি সর্বদা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। এখানেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। প্রফেসর ড.হেমায়েত জাহান সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এবং নারী নেতৃত্ব সহ সকলের সম্মানহানী করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষক সমিতিকে ভুল তথ্য দিয়ে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা এবং জামাত বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।

এ বিষয়ে এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী সিনথী কানিজ বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন হেমায়েত স্যারের সাবজেক্টে আমার পরীক্ষা খারাপ হয়। পরবর্তীতে আমি স্যারের চেম্বারে গিয়ে স্যারকে জানালে তিনি বলেন ছাত্রলীগ করেছ তার ফল পেয়েছো। এখন আমাকে বলে কি লাভ। পরে আমি স্যারের চেম্বার থেকে চলে আসি। কোন কিছু করার থাকলে তো আগে করতাম। তিনি শিক্ষক তার বিরুদ্ধে আমরা কেন যাবো। তবে এতদিন পরে আমাদের সংগঠনের বিরুদ্ধে স্যারের এ ষড়যন্ত্রের কোন উত্তর খুজে পাচ্ছি না।

প্রফেসর ডঃ হেমায়াত জাহান বলেন, গত ১৪ আগস্ট ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম সাগর আমার রুমের সামনে ছিলো এবং মিস্ত্রিকে সরে যেতে বলে তাই আমার কাছে হয় সাগর নিজেই হয়তো আমার কক্ষে তালা মেরেছে। এছাড়া সিনথী কানিজের পরিক্ষা পাশের ব্যাপারে আমার কাছে এসেছিলো, আমি না বলায় সেদিন ক্ষিপ্ত হয় সাগর।

বার্তাবাজার/এম আই