সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের কাংলা হাওরের চাতল বিলে ইজারাদার কর্তৃক হাওরের কৃষকদের সম্পত্তি ও জলাধার অস্ত্রের মহড়া দিয়ে জোরপূর্বক দখলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রঙ্গারচর ইউনিয়নের চাতল বিল ও কালিয়া বিলের খাসিয়াখালী জলমহালের ইজারাদার চাতলপাড়া চানপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নামে জোর পূর্বক ইজারাকৃত জলমহলের থেকেও প্রায় দুই কিলোমিটার দুরে অবস্থিত গ্রামীন সাধারণ কৃষকের ব্যক্তিগত জলাধার জবর দখলসহ অস্ত্রের মহড়া দিয়ে প্রাণ নাশের হুমকিসহ নানাবিধ ক্ষতিসাধনের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।

প্রসঙ্গক্রমে জানা যায়, হাওরের বিল ও জলাধারের জলসীমা নিশ্চিত করতে এবং ইজারাদারদের ইজারাকৃত অঞ্চল চিহ্নিত করে চাতল বিলের জলমহল নিয়ে স্থানীয় কৃষক ও মৎসজীবিদের মধ্যকার সৃষ্ট বিবাদ মিমাংসা করতে বিগত ১৭ ই আগষ্ট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান ও মৎস্যজীবী সমিতি কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ দায়েরের পরবর্তীদিন ১৮ই আগষ্ট, ইজারাদার ও সমিতির পক্ষথেকে একাধিক নৌকাযোগে প্রায় ২০ জনের বেশী মানুষ জলমহলটি অবৈধ ভাবে দখল করার পাশাপাশি নিজেদের ইজারাকৃত সম্পত্তি দাবী করে খুঁটি দেয়ার জন্য তৎতপরতা চালান।

এক পর্যায়ে স্থানীয় কৃষক এবং সাধারণ জনতার মধ্যস্থতায় বাক বিতান্ডায় ইজারাদার ও সমিতির তৎপরতা বন্ধ হলেও তাদের পক্ষ থেকে নানবিধ ভয়ভীতি প্রদান সহ প্রাণনাশের হুমকী পাওয়া যায় বলে জমির মালিক ও স্থানীয় একাধিক কৃষক অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারীদের বর্ণনায় আরো উঠে এসেছে যে, আইন ও প্রশাসনের তোয়াক্কা না করে জোর পূর্বক জমি দখলে নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে অবৈধভাবে অর্থ প্রদান সহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে লোকজন নিয়ে অবৈধ দখল পায়তারা চালান জনৈক অভিযুক্ত আবু তাহের।

এ বিষয়ে আবু তাহেরের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে, ধারালো অস্ত্র সহ মহড়ার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, আমার ভাই ভাতিজারা বিল ইজারা নিছে। আমি তাদের সাথে গেছিলাম। তবে নৌকায় রামদা বা অস্ত্র ছিল কিনা তা আমার জানা নেই। একই ভাবে চানপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমতির সভাপতি আঙ্গুর মিয়াও তার বিরুদ্ধ আনিত অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।

একই বিষয়ের অভিযোগ নিশ্চিত করতে মুঠোফোনে সংযুক্ত করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীনকে। তিনি জানান, জলমহল কেন্দ্রিক একটি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে সংযুক্ত হলে তিনি জানান, থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনও এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। সম্মিলিত ভাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণকরে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

বার্তাবাজার/এম আই