সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা ইংরেজি বিভাগের সাবেক ছাত্র মো. রিশাদ ঠাকুরকে ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শাবি প্রশাসন।

রোববার (২০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রিশাদ ঠাকুরের রুম সিলগালা করে দেওয়া হয়।

শাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়- বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবৈধভাবে অবস্থান করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকারে পরিণত করার অভিযোগে হল কর্তৃপক্ষের সুপারিশের ভিত্তিতে মো. রিশাদ ঠাকুরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। তিনি কখনো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মো. রিশাদ ঠাকুর ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ছিলেন। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা শেষে তিনি মাস্টার্সে ভর্তি হননি। তারপরও রিশাদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবৈধভাবে অবস্থান করে একের পর এক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে চলেছেন।

গত শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে নুর মো. বায়েজীদ নামে এক ছাত্রকে হলে ডেকে নিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে। শাবির গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বায়েজিদ প্রাধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়েজীদকে নিজের কক্ষে (৫০১৬ নম্বর) ডেকে নেন রিশাদ। সেখানে বায়েজীদকে গালাগাল, মারধর ও মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি।

বায়েজীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতা রিশাদকে না জানিয়ে গ্রুপের অন্য সহপাঠীদের নিয়ে আলাদা মিটিং করায় তাকে মারধর করা হয়েছে। পরে তিনি সিলেট এমএজি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেন।

প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য জানান, বায়েজিদকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে গিয়ে রিশাদ লোক প্রশাসনের মারুফ নামের এক ছাত্রকে গলাচিপে ধরেন। এ ঘটনায় বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় রাতেই প্রক্টরিয়াল বডি হল প্রাধ্যক্ষের অনুরোধে বঙ্গবন্ধু হলে রিশাদের কক্ষসহ কয়েকটি কক্ষে অভিযান চালায়। সেখানে কোনো ধরনের অস্ত্রশস্ত্র পাননি তারা। তবে রিশাদের কক্ষ থেকে কয়েকটি মদের খালি বোতল জব্দ করা হয়েছে।

শাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান বলেন, অবৈধভাবে হলে অবস্থান করে ধারাবাহিকভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করত এবং সাধারণ ছাত্রদের বিরক্ত করে আসছিল। তিনি আরও বলেন, হল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে নেওয়া হয়। ক্যাম্পাসে মো. রিশাদ ঠাকুরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

এদিকে, শাবি প্রভোস্ট মনিরুজ্জামান সোহাগ রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় রিশাদ ঠাকুরের রুম সিলগালা করে দেন।

বার্তাবাজার/এম আই