সম্মেলনের দীর্ঘ ১০ মাস পর জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন এ কমিটিতে কোন পদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ও ২ বারের স্থানীয় সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান এমপিকে এ নিয়ে এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে সভাপতি পদে ছানোয়ার হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক পদে হারুন অর রশিদের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর দীর্ঘ ১০ মাস অতিবাহিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি আলোর মুখ দেখেনি। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ্রের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ হয়।

নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি, সম্পাদকীয় ও সদস্য পদে বেশ কয়েকজন নতুন মুখ এলেও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক তথ্য সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান এমপির নাম নেই। সাবেক উপজেলা কমিটিতে সম্মানিত সদস্য ছিলেন এমপি মুরাদ।

এ দিকে মুরাদ হাসানের নাম না থাকায় হতবাক তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, মুরাদ হাসানকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ মুঠোফোনে বলেন, সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগকে গতিশীল করতে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখানে বিতর্কের কোনো স্থান নেই বলে দাবি করেন তিনি।

নতুন কমিটিতে নাম না থাকা প্রসঙ্গে মুরাদ হাসান এমপি বলেন, এটি দুরভিসন্ধিমূলক নোংরা রাজনীতি ও ষড়যন্ত্রের অংশ। আর এ নোংরা রাজনীতি শুধু উপজেলা নয়, জেলা থেকে শুরু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনীতি করি, তিনিই আমাকে দুইবার এমপি ও প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছেন। দলীয় কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের সাথে উপজেলা কমিটিতে থাকা না থাকা নিয়ে যায়-আসে না।

উল্লেখ্য, ডা. মুরাদ হাসান ২০২১ সালের শেষদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পর জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ তাকে দলীয় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করেন না। তবে সরকারি ও প্রশাসনিক কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। সম্প্রতি নিজের অবস্থান জানান দিতে পৃথকভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব ডা. মুরাদ। সর্বশেষ গত ৩১ জুলাই (সোমবার) বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অগ্নিসংযোগ মোকাবেলায় তৃণমূলের প্রায় ৩০ হাজার কর্মীদের নিয়ে কর্মী সমাবেশ ও বিশাল গণমিছিলে মুরাদ সমর্থকদের উপস্থিতি দেখে হতবাক হন পুরো উপজেলাবাসী।

বার্তাবাজার/রাহা