মাঠে বেশ কয়েকবার কাভার সরাতে দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত আর মাঠে গড়ায়নি খেলা। বৃষ্টির আসা-যাওয়ায় খেলায় বিঘ্ন ঘটলেও দিনশেষে খুশি হয়েছে আফগানিস্তানই। কেননা সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ডিএলএস পদ্ধতিতে ১৭ রানের জয় পেয়েছে তারা। ফলে তিন ম্যাচ ওয়ানডের প্রথমটিতে জয় পেয়ে এগিয়ে থাকলো আফগানরা।

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আফগানিস্তান। বৃষ্টির কারণে ৪৩ ওভারে নেমে আসা ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা।

সপ্তম ওভারে তামিম ইকবালকে হারিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের ইনিংস। সাবধানী শুরুর পরও আফগান পেসার ফজলহক ফারুকির বলে থার্ড ম্যান অঞ্চলে কাট করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানায় লেগে জমা হয় উইকেটকরক্ষক রহমনুল্লাহ গুরবাজের গ্লাভসে। ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে ২১ বলে ১৩ রান করেছেন টাইগার অধিনায়ক।

দ্বাদশ ওভারের দ্বিতীয় বলে মুজিব উর রহমানের বল উড়িয়ে মারেন লিটন। তবে ব্যাটে-বলে টাইমিং ঠিকঠাক না হওয়ায় ক্যাচ উঠলে রহমত শাহ সেটি লুফে নেন। ৩৫ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ২৬ রান করে বিদায় নেন তিনি। কিছুক্ষণ পর নিজের প্রথম ওভার করতে আসেন মোহাম্মদ নবি। তার প্রথম বলই লেগে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ সালিমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন শান্ত। এর আগে তিনি খেলে যান ১৬ বলে ১২ রানের ইনিংস।

শান্তর বিদায়ের কিছুক্ষণ পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়নি। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পর মাঠে নেমে টিকতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ৩৫ বলে ১৪ রান করে বিদায় নেন তিনি। পরের ওভারের পঞ্চম বলে রশিদ খানের বল বুঝতেই পারেননি মুশফিক। পায়ের মাঝে দিয়ে চলে যায় স্টাম্পে। মুশফিক বিদায় নেন ১ রানেই।

দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেছেন আফিফ হোসেন। দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝে সুযোগ পেয়েছিলেন হাল ধরারও। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না বাঁহাতি ব্যাটার। সাতে নেমে মাত্র ৪ রান করে আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খানের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছেন আফিফ। ব্যাট করতে নোমা মেহেদি হাসান মিরাজও বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। ফজলহক ফারুকির এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ৫ রান করে বিদায় নেন তিনি।

শেষদিকে তাসকিন আহমেদ এসে সঙ্গ দেন লড়তে থাকা হৃদয়কে। তবে ৭ রান যোগ করতেই তিনি মুজিবের বলে এলবিডব্লিউ আউট হন।

এরপর অবশ্য ফিফটির দেখা পান একপ্রান্তে লড়ে যাওয়া হৃদয়। ৬৭ বলে তিনি এই মাইলফলকের দেখা পান। তবে আর এক রান যোগ করতেই উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন। শেষে হাসান মাহমুদ ৮ ও মোস্তাফিজুর রহমান অপরাজিত থাকেন ৩ রানে।

বাংলাদেশ ১৬৯ রান করলেও ডিএলএস পদ্ধতিতে ৪৩ ওভারে ১৬৪ রানের লক্ষ্য পায় আফগানিস্তান। জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালোই করে তারা। রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৫৪ রান।

উইকেটের খোঁজে থাকা বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব আল হাসান। ২২ রান করা গুরবাজকে শান্তর হাতে তালুবন্দী করান তিনি।

দ্বিতীয় উইকেট পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। তাসকিন আহমেদের বলে খোঁচা মেরে সাজঘরের পথ ধরেন রহমত শাহ। স্লিপে থাকা লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১৪ বলে ৮ রান করেন তিনি।

যদিও তাতে কক্ষপথ থেকে ছিটকে যায়নি আফগানরা। তবে ইব্রাহিম ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদির জুটি ৩ ওভার না পেরোতেই আবার আঘাত হানে বৃষ্টি। ততক্ষণে আফগানদের সংগ্রহ ২১.৪ ওভারে ২ উইকেটে ৮৩ রান। ইব্রাহিম ৫৮ বলে ৫ চারে ৪১ রান এবং শহীদি অপরাজিত ছিলেন ৯ রানে।

ইনিংসের ২০ ওভার পেরিয়ে যাওয়ার কারণে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার উপায় ছিল না। ডিএলএস পদ্ধতিতে ২১.৪ ওভারে ২ উইকেট হারানো আফগানদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬৭ রান। তবেবাংলাদেশের চেয়ে ১৭ রান এগিয়ে থেকে ২১.৪ ওভার শেষ করে তারা। তাই সিরিজে ১-০তে এগিয়ে যায় সফরকারী দলটি।

একই মাঠে আগামী ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে।

বার্তাবাজার/এম আই