পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া বাংলাবান্ধায় জমাজমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে পাথর ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে রক্তাক্ত ও ৫ লক্ষ টাকা জখম অবস্থায় পকেট থেকে চুরির করার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় হারুন অর রশিদ (৫৫) নামের এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে গত ১৮ জুন তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। থানায় মামলাটি এন্ট্রি হওয়ার পর থেকে জীবন হুমকিতে রয়েছে বলে, জানিয়েছেন ভুক্তভোগীবর্গ।

অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের ঝাড়ুয়াপাড়া এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে লোকমান হোসেন (৩৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোকছেদ আলী (৩৩), মৃত- নজরুল ইসলামের ছেলে কাজিমুল (৪৬), মৃত- নেজারুল ইসলামের ছেলে হাবলু (৪০), মো. রবিউল ইসলাম (৪৬), হাবলুর স্ত্রী মোছাঃ নিলুফা (৩৬), কাজিমুলের স্ত্রী মোছাঃ আছমা (৪০), রবিউল ইসলামের ছেলে মো. সাদ্দাম (২২), নজরুল ইসলামের ছেলে আজিমুল হক (৫০) ও সাজিরুল হক (৩৬), মৃত- নেজারুল ইসলামের ছেলে হামিদুল ইসলাম ও জায়গীরজোত গ্রামের মৃত- নেজারুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৬০)।

অভিযোগে জানা যায়, আমি ও আমার ছেলে রাশিদুল ইসলাম একত্রে বাংলাবান্ধা ঝাড়ুয়াপাড়ায় পাথরের ব্যবসা করি। মেসার্স রাশিদুল এন্টারপ্রাইজ নামে আমাদের একটি পাথরের সাইট রয়েছে। এই পাথরের সাইটের পার্শ্বের জমি নিয়ে আসামিদের সাথে জমির মালিকের বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন থেকে। পাথরের সাইটে ঢুকার জন্য আমাদের কোন রাস্তা না থাকায়, ওই জমির উপর দিয়ে পাথরের সাইটে গাড়ী নিয়ে আসা যাওয়া করে। আসামিরা প্রায়ই আমাদের পাথরের সাইটের গাড়ী যাওয়া-আসা করতে বাধা দেয় ও বিভিন্ন সময় হুমকি দেয় তারা পাথরের সাইটের জমির উপর দিয়ে গাড়ী ঢুকতে দেখলে গাড়ী ভাংচুর করে ক্ষতি করবে।

গত ১০ জুন বিকেল ৫টার দিকে জিয়াউর রহমান মেসার্স রাশিদুল এন্টারপ্রাইজ পাথরের সাইটে লেবারের বিল পরিশোধের জন্য পাথরের সাইটে গেলে আসামিরা পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে বেআইনীভাবে দলবল নিয়ে হাতে লাঠিসোটা, দা, ধারালো ছোড়া, লোহার রড ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে পাথরের সাইটে অনধিকার প্রবেশ করেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

জিয়াউর গালিগালাজের কারণ জানতে চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে উদ্যত হলে সে আমাকে ফোনে জানালে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দেখি জিয়াউরকে তারা এলোপাথারী মারছে। ওই সময় মামুন নামের একজন জিয়াউরকে বাঁচাতে গেলে তাকেও লোহার রড দিয়ে মেরে গুরুতর জখম করে। পাথরের সাইটে আমাদের দেখতে পেয়ে আরেক আসামি কাজিমুল অন্য আসামিদের আমাদের প্রাণে মেরে ফোর হুকুম দিলে আরেক আসামি লোকমান হোসেন লোহার সাবল দিয়ে আমার উপর আঘাত করলে গুরুতর জখম হই। ওই সময় কাজিমুলও লোহার রড দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করে। ছেলে রাশেদুল আমাকে বাঁচাতে আসলে তাকেও ছোড়া দিয়ে কুপ দিয়ে জখম করে। ওই সময় তার পকেট থেকে তারা পাথর কেনার ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী জানান, এ ঘটনায় ১২ জনকে অভিযুক্ত করে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় এজাহার দায়ের করি। তারা আমার ছেলে রাশেদুলের পকেট থেকে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করে বিচার পাচ্ছি না। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে গত বছর ২৭ এপ্রিল তেঁতুলিয়া থানায় প্রসিকিউশন মামলা, ৫ জুন আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় মামলা ও সর্বশেষ চলতি সালের ১৮ জুন কাজীমুল, হাবলু, আজিমুল, লোকমান ও মকসেদকে অভিযুক্ত করে তেঁতুলিয়া থানায় মামলা করেছি। এর উপযুক্ত বিচার চাই।

তবে আসামিদের মধ্যে হাবলু জানান, ঘটনাটি মিথ্যা। তবে এ নিয়ে তারা যা করতে পারে করুক। এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ চৌধুরী জানান, থানায় ভুক্তভোগী হারুন অর রশিদ থানায় মামলা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।

বার্তাবাজার/এম আই