গত দুই মাস ধরে ডলার সংকটের অজুহাতে ফরেন ডিমান্ড ড্রাফট (এফডিডি) সর্বরাহ বন্ধ রেখেছে কক্সবাজারের টেকনাফের দুটি ব্যাংক। ফলে স্থলবন্দরের ওয়্যার হাউজে পড়ে রয়েছে শত কোটি টাকার কাঠ ও সুপারিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য। এতে লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। একইসাথে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
এই সংকট নিরসনে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে নাফ গেস্ট হাউজে টেকনাফ স্থলবন্দর ব্যবস্থাপনা ও আমদানি সহযোগিতাকরণ সভা অনুষ্টিত হয়েছে। টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক এমপি আব্দুর রহমান ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আলম।
সভায় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, গত মে মাসের শেষের দিক থেকে সোনালী ব্যাংক এবং এবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সরকারের কোনও নির্দেশনা ছাড়াই ডলার সংকট দেখিয়ে কাঁচা পণ্য ব্যতীত অন্যান্য মালামাল ডেলিভারিতে ড্রাফট সর্বরাহ বন্ধ রেখেছে। ফলে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা কাঠ, সুপারি, আচার, নারিকেল, শুঁটকিসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল পড়ে আছে বন্দরে। এ অবস্থায় অনেক পণ্যে পঁচন ধরেছে বলেও জানায় ব্যবসায়ীরা। এর ফলে লোকসানে পড়েছে তারা। এ সময় টেকনাফ স্থলবন্দরে রোহিঙ্গা শ্রমিক ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি বলেন, সরকারি নির্দেশনা না থাকার পরও কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা ডলারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। তিনি এই সংকট উত্তরণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, ‘স্থলবন্দরে রোহিঙ্গা শ্রমিকদের ব্যবহার বন্ধের কথা বারবার বলে আসলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে শ্রমবাজার রোহিঙ্গাদের দখলে চলে যাচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
সভা শেষে জেলা প্রশাসক শাহীন মুহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘ড্রাফট সংকটে স্থলবন্দরে মালামাল জটসহ সব ধরনের সমস্যা নিরসনে আমরা বৈঠকে বসেছি। দ্রুতই সমস্যা সমাধান করা হবে। পাশাপাশি আমরা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আদা, রসুন ও পেঁয়াজ আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করছি।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, স্থলবন্দরের জিএম (অ্যাডমিন অ্যান্ড সিকিউরিটি) মেজর (অব.) সৈয়দ আনছার মো. কাউছার, কক্সবাজার সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ডিজিএম মো. আসাদ, ভূমি কমিশনার এরফানুল হক চৌধুরী, টেকনাফ মডেল থানার ওসি আব্দুল হালিম, এবি ব্যাংক টেকনাফ শাখার ম্যানেজার মনজুরুল আলম চৌধুরী, স্থলবন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের জিএম জসীম উদ্দিন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর প্রমূখ।
বার্তা বাজার/জে আই
