মঙ্গলবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের ফরিজপুর এলাকা থেকে এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করা হয়।

বুধবার বিকেলে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন। গ্রেফতার হওয়া হাফেজ মাওলানা শরীফুল ইসলাম জেলার আদর্শ সদর উপজেলার গোপালসার গ্রামের মো. আলীর ছেলে। তিনি ময়নামতি মডেল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ পদে আছেন।

পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী ময়নামতি মডেল মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। মাদ্রাসার ২য় তলায় হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। একই ভবনে অধ্যক্ষ তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। যে কক্ষে ভুক্তভোগী থাকতো সেই কক্ষের দরজার তালা আগে থেকে ভাঙা ছিল। হোস্টেলের ছাত্রীদের দেখাশোনা করার জন্য মাদ্রাসায় একজন মহিলা শিক্ষক আছেন।

ঘটনার দিন মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে মহিলা শিক্ষক হোস্টেলে না থাকার সুবাদে অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম ভুক্তভোগীর কক্ষে প্রবেশ করে অনৈতিক কাজ করার সময় পাশে থাকা অন্য একজন ছাত্রী দেখে ফেলে। ঘটনায় পর দিন অধ্যক্ষ ওই ছাত্রীকে অফিসে ডেকে নিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেন, একইসঙ্গে ঘটনা যাতে কাউকে না বলা হয়, তার জন্য চাপ দেন। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী এসে ভুক্তভোগীকে ঘটনাটি জানালে ভুক্তভোগী গিয়ে অধ্যক্ষের স্ত্রী তফুরা আক্তার তনুকে (২২) জানায়। সব কিছু শুনে অধ্যক্ষের স্ত্রী তনু ৪ ছাত্রীকে তাদের পরিবারের কাছে নিয়ে দিয়ে আসে।

এই বিষয়ে ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, শনিবার( ১৬ জুন) রাতে অধ্যক্ষের স্ত্রী আমায় কল দিয়ে জিজ্ঞাসা করে আমার মেয়েকে বাসায় এনেছি কিনা বা আমার মেয়ে আমাকে কিছু বলেছে কিনা? অধ্যক্ষের স্ত্রীর এমন প্রশ্ন আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। পরে মেয়ের কাছে ঘটনা জানতে চাইলে সব কিছু খুলে বলে। সে তার যৌনাঙ্গে ব্যথার কথা জানায়। পরে মেয়েকে কুমিল্লা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

এই ঘটনায় কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন জানান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মকর্তার মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ঘটনাটি শুনে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অধ্যক্ষ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

বার্তাবাজার/রাহা