প্রেমিকের ডাকে সাড়া দিতে এসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে লালমনিরহাট সরকারি মজিদা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ম” (ছদ্দ নাম) আক্তার।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দুই বছর পূর্বে সোহাগ নামের এক যুবকের সাথে কলেজ ছাত্রী মুন্নির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোহাগ নিজেকে বিমানবাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছে, বর্তমানে সে ঢাকার কুর্মিটোলায় ও কর্মরত রয়েছে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে ১৭ জুন শনিবার বিকেল চারটার দিকে বিমান বাহিনী এলাকা সংলগ্ন টিটিসির সামনে মোবাইল ফোনে দেখা করার জন্য ডেকে নেয়। এরপর তাকে নিয়ে আশেপাশে ঘুরাঘুরির করে সন্ধার দিকে রানওয়ের পাশে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানেই বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর ঘটনাস্থলে আরও অজ্ঞাত দুইজন যুবক এসে হুমকি ধামকি শুরু করলে কৌশলে বিমান বাহিনীর পরিচয় দেয়া সদস্য সোহাগ পালিয়ে যায়। পরে ওই দুই যুবকের মধ্যে একজন মুন্নিকে ভয় ভিতি ও হত্যার হুমকি দিয়ে আবার ও ধর্ষণ করে। সে সময় ভিকটিমের মোবাইলে তার বোন বিথি আক্তারের কল আসলে সে কোন রকমে রিসিভ করে তাকে বাচানোর জন্য আকুতি মিনতি জানায়। মুন্নির কান্নাজড়িত কন্ঠ শোনায় বিথি, বিথির স্বামী ও পরিবারের লোকজন ঘটনার বর্ননা অনুসারে টিটিসির আশে পাশে খোঁজা খুজি করার একপর্যায়ে আহত অবস্থায় মুন্নিকে উদ্ধার করে জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে। এরপর সেখান পুলিশ উপস্থিত হলে স্বাক্ষীগণের সহযোগিতায় তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত ওই ব্যক্তি বর্তমান লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মুন্নির বাবা আজিজার রহমান পেশায় ভ্যান চালক। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বটতলার ভাটাবাড়ী এলাকায়।

গণধর্ষণের বিষয়টি বর্তমানে টপ অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও মুখে মুখে আলোচিত হচ্ছে ঘটনাটি। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন বিমান বাহিনী এলাকাটি সম্পূর্ণ সংরক্ষিত। রানেওয়েতে ২৪ ঘন্টায় দায়িত্বে কোন না কোন সদস্য থাকে এমনকি রাতে ও টহল দেয় বিমান বাহিনীর সদস্যরা।তারপরে ও এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ঘটনার সাথে যেই জড়িত হোক তাদের যেন কঠোর শাস্তির হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান যখন রানওয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করেছিল তখন এমন ঘটনা ঘটেনি অথচ এটি সংরক্ষিত করার পরে এমন একটি ঘটনা ঘটলো যেটা কারোই কাম্য নয়।

ঘটনার বিষয়ে বিমান বাহিনী লালমনিরহাট রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিটের পক্ষ থেকে জানায়, সোহাগ নামের কোন ব্যক্তি তাদের ইউনিটে কর্মরত নেই। যিনি বিমান বাহিনীর সদস্যের পরিচয় দিয়েছেন তিনি প্রতারণার উদ্দ্যেশ্যে এমনটি করেছেন। আর ওই ঘটনাটি হাইওয়ের পাশেই যেখানে কাজ চলছে। ওই ভিকটিম কতটুকু সত্য বলছে সেটি পুলিশের পক্ষ থেকে ইনভেস্টিগশন চলছে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানা অফিস ইনচার্জ এরশাদুল আলম জানান, ঘটনাটি জানার পর থেকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সহকারে বিষয়টি তদন্ত করছি। সেই সাথে বাদির দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করার চেষ্টা করছি।

বার্তাবাজার/এম আই