বর্তমানে ভোক্তারা এক কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনছেন ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। চলতি মাসের প্রথম দিকে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত ওঠার পর আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। আমদানির পর পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে বেশ নেমে এলেও খুচরা বাজারে পেঁয়াজ তার দামের ঝাঁজ নিয়ে নিজের জায়গাতেই আছে।

শুক্রবার (১৬ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের কয়েকটি ধরন পাওয়া গেছে। মানভেদে দামেও আছে ভিন্নতা। খুচরায় মানভেদে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৬৫ টাকা কেজি।

গত কয়েক মাস ধরেই অস্থির দেশের পেঁয়াজের বাজার। এতে নাজেহাল ভোক্তারা। বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে চলতি মাসের ৫ জুন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এরপরও কমছে না পেঁয়াজের দাম। দাম না কমায় একে অপরকে দুষছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা এবং আড়তদাররা।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, বাজারে পেঁয়াজের দাম যেভাবে কমবে আশা করা হয়েছিল, পাইকারিতে দাম সেভাবেই কমেছে। তবে খুচরা বাজারে সেভাবে কমেনি। এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম। পাইকারিতে কেজি প্রতি পেঁয়াজ ৭২ থেকে ৭৪ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরা বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে ৮০ টাকা পর্যন্ত।

আব্দুর রহিম নামে এক খুচরা বিক্রেতা জানান, মূলত অসাধু আড়তদারদের কারণে পেঁয়াজের দাম কমছে না। তারা ইচ্ছে করে দেশি পেঁয়াজ বাজারে ছাড়ছে না। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ ঠিকই কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

আর আড়তদাররা বলছেন, বাজারে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। প্রতিদিন ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পেঁয়াজ আসছে। আড়তগুলোতে পেঁয়াজের দাম কম থাকলেও পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে বাড়ছে দাম।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আশিক মিয়া আরটিভি অনলাইনকে বলেন, পাইকারি বাজার থেকে দেশি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৭২ থেকে ৭৪ টাকায়। আর খুচরা বাজারে এই পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৮০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারের ঢোকার পরও দাম কমছে না। যদিও এ পেঁয়াজ বাজারে আসার আগে দেশি পেঁয়াজ পাইকারি পর্যায়ে থেকে আমরা কিনতাম ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এখন বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আসায় দেশি পেঁয়াজের দাম কমে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৪ টাকায়।

তিনি বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম যেভাবে কমবে আশা করা হয়েছিল, পাইকারিতে দাম সেভাবেই কমেছে। তবে খুচরা বাজারে সেভাবে কমেনি। আমদানির প্রথম দফায় আসা পেঁয়াজের মান ততটা ভালো ছিল না। এ জন্য বাজারে প্রভাব রাখতে পারেনি। এখন যে পেঁয়াজ আসছে, তা বেশ ভালো মানের। তাতে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে আসবে আশা রাখি। কোরবানির আগে আর দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে পেঁয়াজের দামের এ অবস্থায় দিশেহারা ভোক্তারা। কারওয়ান বাজারের ক্রেতা তানভীর আহমেদ জানান, জিনিসপত্রের দাম বেশি থাকায় হিসাব করে বাজার করতে হচ্ছে। তার দাবি, দ্রুত বাজার তদারকি জোরদার করে দাম নিয়ন্ত্রণের।

জায়েদ নামে আরেক ক্রেতা জানান, আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম বাড়লে সেটা আর কমে না। পেঁয়াজ আমদানির খবর শুনে একটু খুশি হয়েছিলাম। আমদানির এতদিন পরও পেঁয়াজের দাম একদমই কমছে না।

বার্তাবাজার/এম আই