ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হলেন সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাভার উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব।

বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা (সাভার) মোঃ আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এসংক্রান্ত আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

এছাড়া, শুক্রবার (৩ মে) সকালে সাভার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী দুইজনের মধ্যে একজন সৈয়দ মাহাদী হাসান বুলবুল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে রাজীব।

এর আগে, গত রোববার বিকেলে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ তরিকত ফ্রন্টের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহাদী হাসান বুলবুল তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিলে দ্বিতীয়বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন মঞ্জুরুল আলম রাজীব।

উল্লেখ্য, সাভার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনটি পদে মোট ১২ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বৈধ প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব ও বাংলাদেশ তরিকত ফ্রন্টের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহাদী হাসান বুলবুল। পরে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন বুলবুল।

প্রসঙ্গত, প্রথমবার সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে মঞ্জুরুল আলম রাজীব যখন দায়িত্বভার গ্রহন করেন, তখন সাভার উপজেলা দেশের অন্যান্য উপজেলার মধ্যে একদম তলানিতে দ্বিতীয় অবস্থান নিকে ধুঁকছিলো। রাজীবের দক্ষ নেতৃত্বে সেই শেষের দিকের দ্বিতীয় উপজেলাটি বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে! এজন্য রাজীব আন্তর্জাতিক ভাবে জাইকা’র থেকেও পুরস্কৃত হয়েছেন।

সাভার উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, বিগত পাঁচ বছরে একসময়ের ভঙ্গুর সাভার উপজেলার শিমুলিয়া, ধামসোনা, বিরুলিয়া, আশুলিয়া, পাথালিয়া, বনগাঁও, ইয়ারপুর ও সাভার এই ৮টি ইউনিয়নে ১৯৬.৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট ২৩৬টি সড়কের জন্য ২৬৮ কোটি ২০ লাখ টাকার বরাদ্দ আসে। এর ভিতর মোট ১০৬টি সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, ৪৭টির কাজ চলমান এবং ৮৩টি প্রস্তাবিত অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি, ২০৪৬ মিটার দৈর্ঘ্যের ২২টি ব্রিজ এবং ২০টি কালভার্টের জন্য মোট ১১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকার বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে, ৫টির কাজ সম্পন্ন, ২৪টি চলমান এবং ১৩টি প্রস্তাবিত। উক্ত সময়সীমায় ৪২টি বিদ্যালয়ের জন্য ২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দে ২৫টি বিদ্যালয়ের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ৯টির কাজ চলমান এবং ৮টি প্রস্তাবিত অবস্থায় আছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, সমগ্র দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার শীর্ষক প্রকল্পে সাভারে শ্রী শ্রী গোপীনাথ জিউর মন্দির, শ্রী শ্রী গোপাল আখড়া এবং সাভার কবিরাজ পাড়া সার্বজনীন বড় মন্দির প্রস্তাবিত অবস্থায় আছে। সাভার উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গ্যালারিসহ মুক্তমঞ্চ ও দ্বিতল ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট একতলা প্রশিক্ষন ভবনের কাজ চলমান (চুক্তি মূল্য: ১,৮৮,৯৭,৯৭৫.১০ টাকা)। সাড়ে নয় লাখ টাকা ব্যয়ে নামা বাজার শ্মশান উন্নয়ন, বায়তুন নাজাত তালবাগ কবরস্থান জামে মসজিদ উন্নয়ন (অংশ-১) ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে, একই মসজিদের ২য় অংশ ১৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এবং সাড়ে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ ও পঞ্চবটী আশ্রম উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, সাভার উপজেলাধীন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রস্তাবিত রয়েছে।

গণমাধ্যমকে সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব জানান, সাভারবাসীর চাকর হিসাবে বিগত পাঁচ বছর কাজ করেছি আমি। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প (UGDP) কর্মদক্ষতা মূল্যায়নে ঢাকা জেলার মধ্যে সাভার উপজেলা ১ম স্থান অর্জন করেছে। দেশের সর্বনিম্ন উপজেলা থানচির পরে দ্বিতীয় সর্বনিম্নে স্থান ছিল সাভার উপজেলার। সেখান থেকে একে আমি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। জাইকা একারণে আমাকে মূল্যায়ন ও করেছে। আমি সামনেও এই ধারা অব্যাহত রাখবো।

বার্তা বাজার/এইচএসএস