ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় সদর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য সৈয়দ শরিফুল ইসলাম কারাগার থেকে বের হওয়ার পর ফুলের মালা পড়িয়ে বরণ করে নেয় নেতাকর্মীরা।

সোমবার (১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রাজজ আদালতের বিচারক মো. আকবর আলী শেখ যুবলীগ নেতা সৈয়দ শরিফুল ইসলামকে জামিন দেন। জামিনের আদেশ কারাগারে পৌঁছালে ওইদিন সন্ধ্যায়ই কারাগার থেকে ছাড়া পান তিনি।

এদিকে যুবলীগ নেতা সৈয়দ শরিফুল ইসলামের কারামুক্তির খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতশত মানুষ আলফাডাঙ্গা থানা সংলগ্ন সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এরপর সৈয়দ শরিফুল ইসলাম এলাকায় পৌঁছালে তাকে মালা পড়িয়ে বরণ করে নেন তারা। পরে উৎসুক জনতা আনন্দে মিষ্টি বিতরণ করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান, সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম আহাদুল হাসান, সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক শেখ, লেবাজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান সমাজসেবক তাজমিনউর রহমান তুহিন, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন পিকুল, সাবেক ইউপি সদস্য রফিক মিয়া, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সানোয়ার মিয়া, সদর ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি রাজ্জাক মোল্যা মেম্বার, ইউপি সদস্য মর্জিনা বেগম, রবিউল ইসলাম মিয়া, মো. শওকত হোসেন, জাকির মিয়া, এনামুল হক তালুকদার ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি নাহিদ রাজু প্রমুখ।

এরপর সৈয়দ শরিফুল ইসলাম সদর ইউনিয়নের মহিষারঘোপ বাজারে আওয়ামী যুবলীগের দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছালে সেখানেও তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়।

এসময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, ‘আজ আমি সৎ ছিলাম বলেই কারামুক্ত হয়ে আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি। আমাকে যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমত ছাড়া এত সহজে জামিন হয় না। ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করে আপনাদের ভালোবাসা থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে না। খুব শীঘ্রই ষড়যন্ত্রকারীদরে মুখোশ উন্মোচন হবে। সবাই ধৈর্য্য ধরে থাকুন।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১০ মার্চ গভীররাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামে সৈয়দ শরিফুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায় কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া র‌্যাব-৬। এ সময় তার বসতঘরের পাশে উন্মুক্ত রান্না ঘর থেকে একটি দেশি ওয়ান শুটার অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে আলফাডাঙ্গা থানায় সোপর্দ করে অস্ত্র আইনে র‌্যাব মামলা দায়ের করলে থানা পুলিশ তাকে আদালতে প্রেরণ করেন। এরপর গত ১৯ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম এক সপ্তাহের রিমান্ডের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিজ্ঞ আদালত।

নেতাকর্মীদের দাবী, নির্বাচনে পরাজিত প্রতিপক্ষ সৈয়দ শরিফুল ইসলামকে দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে ঝামেলায় জড়ানোর পাঁয়তারা করে আসছিলো। শেষমেশ রাতের আঁধারে একটি উন্মুক্ত রান্নাঘরে অস্ত্র রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভুল তথ্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

এদিকে গত ১৪ মার্চ এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত করে আসল অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও সৈয়দ শরিফুল ইসলামকে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা থেকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছেন ইউনিয়নের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ, ইউপি সদস্য ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।