দুই বাড়িতে কবে আসবে মরদেহের লাশ তা এখনো অজানা। এরপরও দুই পরিবারে কান্নার আওয়াজ, ভারী করে তুলেছে বাতাস। এমন পরিবেশ কখনো দেখেনি গ্রামবাসী।

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের কথা। মালয়শিয়ায় ভয়াবহ ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় ৩ জন বাংলাদেশী মারা গেছেন। এর মধ্যে ওই গ্রামেরই ২ জন।

সরেজমিনে এলাহাবাদ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুই পরিবারে কান্নার রোল। স্বজনদের চিৎকারে শোকে স্তব্দ পুরো এলাকা, কারো ছেলে হারানোর শোক, কেউ ভাইয়ের মৃত্যুতে মুর্ছা যাচ্ছেন। নিহত দু’জনই জীবিকার তাগিদে বাড়ি ছেড়ে কলিং ভিসায় মালয়শিয়ায় কাজ করতে যান।

পরিবার ও গ্রামের মানুষেরা অপেক্ষা করছেন মরদেহের জন্য। একসঙ্গে দূর্ঘটনায় একাধিক মরদেহ কখনো দাফন কথা কখনো ভাবেননি গ্রামবাসী।

উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ রাতে মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের কাজাং কেটিএম পুনচাক উতামা জেড হিল ট্র্যাকে দুর্ঘটনায় নিহত হন তিন বাংলাদেশি।

এর মধ্যে দু’জন হলেন- কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের লিটন মেম্বারের বাড়ির শহিদ মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন ও অপরজন হলেন হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. দুলাল মিয়া। এই দূর্ঘটনায় খবর তাদের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছার পর থেকে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

কামাল হোসেনের পিতা বৃদ্ধ শহিদ মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার জীবনের সবস্বপ্ন ছিলো তাকে ঘিরে, এই মর্মান্তিক মৃত্যু সব শেষ করে দিলো আমার সন্তানের লাশটি চাই আর কিছু দরকার নেই আমার। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি আমার সন্তানের লাশ যাতে দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করে দেন।

নিহত দুলালের মা আনোয়ারা বেগম বার বার মুছা যাচ্ছেন তাকে ঘিরে ধরেছে এলাকাবাসী তিনি শুধু তার আদরের সন্তানের লাশটি চাই, তার পরিবারে একমাত্র উপাজনকারী ব্যক্তি ছিলো সেই। তার বৃদ্ধ খালা ও দুই সন্তানের আর্তনাতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার সকালে অত্র এলাকায় গিয়ে স্বজনদের খোঁজ খবর নেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। তারা জানান, নিহত ২ জনের বাড়ি তাদের উপজেলায়। পরিবারের দুঃখ দুর্দশা দূর করতে তারা মালয়শিয়ায় যান, অনাকাঙ্খিত এই অগ্নিকাণ্ডে এই পরিবার গুলি নিঃস্ব এখন।

নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ সমবেদনা জ্ঞাপন করেন স্থানীয় সাংসদ ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ।