মাদারীপুর শিবচরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা সফরে বাসে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষকদের মদ পান করার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ২ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

জানা গেছে, শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের শিকদার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গত শনিবার নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও শিক্ষা সফরে যান বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। শিক্ষা সফর শেষ করে আসার পথে গাড়িতে বসেই শিক্ষার্থীদের সাথে মদ পান করেন বিদ্যালয়ের ২ শিক্ষক। মদ্য পান করার সময় কোন একজন ভিডিও করে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে ভাইরাল হয়ে যায়। নড়েচড়ে বসেন উপজেলা প্রশাসন। এই ঘটনায় শিবচর উপজেলা প্রশাসন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মাকসুদুর রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আসাদুজ্জামান রহমান ও শিবচর উপজেলা প্রশাসানিক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। কমিটিকে এক কর্ম দিবসের মধ্যে রির্পোট প্রদান করতে বলা হয়েছে। এঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে তাৎক্ষণিকভাবে শিকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক অলিক র্মোশেদ ও আল নোমানকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোসা. জীম আক্তারীর মা বলেন, আমার মেয়েও গিয়েছিলো শিক্ষা সফরে, আমরা যারা বাচ্চাদের অভিভাবক আছি তাদেরকে শিক্ষকরা সাথে নেয় নাই। শিক্ষকদের সামনে যদি এমন কর্মকান্ড হয় তবে আর কিছুই বলার থাকে না।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আবির হোসেন বলেন, আমার বন্ধুরা শিক্ষা সফরে গিয়েছিলো। ওরা ফেসবুক স্টোরি দিয়েছে। আমি ভিডিওতে দেখেছি ওরা ফরেন বোতল মদ পান করেছে। তবে ওরা স্যার ম্যাডামদের সামনেই খেয়েছে মদ। মদ পান করছে সরোয়ার, রবিউল, মোস্তফা, এদের ভিডিও দেখেছি। এছাড়াও অনেকে খেয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমার বাড়ি সদরপুর, আমি আগের দিন ঢাকাতে গিয়ে অবস্থান করেছি। শিক্ষা সফরে আমি যোগ দিয়েছি ঢাকা থেকে। এর আগে বাসের মধ্যে কি হয়েছে তা আমি জানিনা। দায়িত্বে ছিলেন শিউলি ম্যাডাম। আমি বাসে উঠার পর এমন কোনো ঘটনা ঘটে নাই।

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, এটা কোনো ভাবেই গ্রহনযোগ্য না। তদন্ত রিপোর্টে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি প্রধান শিক্ষকের গাফলতি পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।