বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চুয়াল বক্তব্য দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তুলে ধরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরই, কেবল আমাদের পক্ষে দেশ বিদেশের সমর্থন এসেছিল। এরপর যুদ্ধ করেই আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছি। এবারের লড়াই দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা রক্ষায় লড়াই। এ লড়াইয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতে আমাদেরকেই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি জানান, আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা ব্যতিত প্রতিটি মানুষ আজ নিরাপত্তাহীন শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। মানুষের জান-মাল ও জীবন-জীবিকার কোন নিরাপত্তা নেই। নারী, শিশু নির্যাতন ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। সরকারের কারণে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এই অবস্থায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসের বর্বরোচিত সেনা হত্যাযজ্ঞের দিনের কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি খোদ রাজধানীতে বিডিআর পিলখানায় ঘটে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। ঠাণ্ডা মাথায় সুপরিকল্পিতভাবে বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। মাত্র একদিনে এতো সংখ্যক সেনা কর্মকর্তা হত্যার নজির বিশ্বের আর কোথাও কোনো দেশে নেই। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসেও এতসংখ্যক সেনা কর্মকর্তাকে প্রাণ দিতে হয়নি। ইতোমধ্যে ১৫ বছর পার হয়ে গেলেও এমন বর্বরোচিত ঘটনার আজ পর্যন্ত বিচার সম্পন্ন হয়নি। বরং বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় সেনা হত্যাযজ্ঞের দায়ে যাদের কারাগারে থাকার কথা ছিল তারাই এখন অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে।

সাতক্ষীরা জেলাধীন শ্যামনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্ববায়ক জুলফিকার সিদ্দীককে পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে রিজভী বলেন, তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় মেম্বার জাফর আলীসহ বাজারের দোকানদাররা বাঁধা দিলে তারা বলেন আমরা ডিবির লোক। এসময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক বর্তমান যুবলীগ নেতা হাফিজুর রহমান ও যুবলীগ নেতা উজ্জ্বল উপস্থিত ছিলেন। জুলফিকার সিদ্দীককে তুলে নেওয়ার ১০ মিনিট পর তার মোটরসাইকেলটি ছাত্রলীগ নেতা উজ্জ্বল নিয়ে যায়। পরবর্তীতে জুলফিকার সিদ্দীকির মা শ্যামনগর থানায় গিয়ে খোঁজ করলে ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন তাকে ডিবি তুলে নিয়ে গেছে। এখনো তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

তিনি অবিলম্বে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জুলফিকার সিদ্দীককে জনসম্মুখে হাজির করে তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেওয়ার জোর আহ্ববান জানান।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভুইয়া, বিএনপির সহ অর্থ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন প্রমুখ।

বার্তা বাজান/আইএফ