মালয়েশিয়া শনিবার দিবাগত রাতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হল মুসলিম জাহানের সৌভাগ্যের রজনী পবিত্র লাইলাতুলকদর বা শবেবরাত। গতকাল শনিবার কুয়ালালামপুর সহ দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থিত বাংলাদেশী সুরাও বা মসজিদ গুলো তে রাতভর মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে ইবাদত বন্দেগীতে মগ্ন ছিলেন ধর্মপ্রান মুসলিম প্রবাসীরা। তবে মাযহাব ভিন্নতার কারণে মালয় মুসলিমদের শবেবরাত পালনে মসজিদে তাদের তেমন উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।

রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে সেমুনিয়াহ রাজ্যের সুরাও আয- জৈন নামে একটি বাংলাদেশী মসজিদে পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত সহ রাতভর মাওলার দরবারে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল ছিলেন। এসময় সুরাও আয-জৈন মসজিদে প্রায় ৭ শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি উপস্থিত হয়ে শবেবরাত এর নামাজ আদায় করেন। মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের বড় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় এ মসজিদে। হাদিসে বর্ননা অনুযায়ী হাজার রজনী থেকে উত্তম চির মহিমান্বিত এই শবেবরাত সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে । এসময় প্রাপ্ত বয়স্ক আগ্রহী সকল বাংলাদেশী প্রবাসীদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আরবি হরফ নূরানী থেকে শুরু করে কোরআান তেলাওয়াত ও তর্জমা করা পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এই কোরআন শিক্ষার নেতৃত্বে রয়েছেন হাফেজ মাওলানা মো. কবির আহমেদ। এসময় প্রায় অর্ধ শতাধিক প্রবাসী কে কোরআন শিক্ষার ছবক দেন মাওলানা কবির আহমেদ। এসময় তিনি বলেন, যে কোন বয়সের প্রবাসী বাংলাদেশি পবিত্র কোরআন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন। যারা আগে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারতেন কিন্তু এখন ভুলে গেছেন অথবা যারা একেবারে কোরআন তেলাওয়াত জানেন না তারা সবাই এ কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন।

শবে বরাত হচ্ছে বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ রাত। এ রাতে আল্লাহ পাপী বান্দাদের মুক্তি দেন। মহানবী সা. বলেন, যখন শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাত আসবে, তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে এবং দিনে রোজা পালন করবে। কেননা এই দিন সূর্যাস্তের পরই আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, ‘কে আছো ক্ষমাপ্রার্থনাকারী, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছো রিজিকপ্রার্থী, আমি তাকে রিজিক দেব। কে আছো বিপদগ্রস্ত, আমি তাকে বিপদমুক্ত করব। ফজর হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা এ কথা বলতে থাকেন।’ (ইবন মাজাহ (১৩৮৮)
এ রাতে আল্লাহ বান্দাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। মহানবী সা. বলেন, এ রাতে আল্লাহ তাআলা বনু কালবের ছাগলগুলোর পশমের চেয়ে বেশিসংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করেন। (ইবন মাজাহ)

কিন্তু বিশেষ কিছু লোক এ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হয়। মহানবী সা. বলেন, ‘শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাতে আল্লাহ তার সব বান্দাকে ক্ষমা করেন। তবে মুশরিক, হিংসুক, জাদুকর, ব্যভিচারী, মা-বাবার অবাধ্য সন্তান ও অন্যায়ভাবে হত্যাকারীকে ক্ষমা করেন না।