চলতি বিপিএলে একক আধিপত্য চলছে রংপুর রাইডার্সের। আসরে টানা সপ্তম জয়ে সবার আগে প্লে অফ নিশ্চিত করেছে সাকিব-সোহানরা। নিজেদের সপ্তম ম্যাচে চট্টগ্রামের মাঠে চট্টগ্রামকে তারা হারিয়েছে ১৮ রানে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে তারা হারিয়েছে ১৮ রানের ব্যবধানে। রংপুরের দেয়া ১৮৮ রান তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান করতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা। টানা তিন হারে প্লে অফ অনেকটা অনিশ্চিত সাগরিকা পাড়ের দলটির।

ম্যাচ জিততে শেষ ২ ওভারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের প্রয়োজন ছিল ৫১ রান। হাসান মাহমুদের করা ১৯তম ওভারে তিন ছক্কায় নিলেন ২২ রান। তাতে শেষ ওভারে রোমারিও শেফার্ড এবং শহিদুল ইসলামকে করতে হতো ২৯ রান। তাণ্ডব চালিয়ে ২১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা শেফার্ড জিমি নিশামের ওভারে নিতে পারলেন কেবল ১০ রান। তাতেই শেফার্ডে ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পরও ১৮ রানে হারতে হয়েছে চট্টগ্রামকে। এদিকে টানা সাত ম্যাচে জিতে প্রথম দল হিসেবে প্লে অফে জায়গা করে নিলো রংপুর। রান তাড়া করতে নেমে এদিন শুরু থেকেই ছন্নছাড়া ছিল চট্টগ্রামের ব্যাটাররা। প্রোটিয়া পেসার ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের তোপে দলীয় ৩২ রানের মধ্যে তিন টপ অর্ডারকে হারায় তারা। তানজিদ হাসান তামিম ১৬ বলে ১৩ রান করে কট বিহাইন্ড হন। ৪ বলে ৪ রান করে ক্যাচ দেন জশ ব্রাউন আর সৈকত আলী ৭ বলে ৯ রান করে বোল্ড হন। চতুর্থ উইকেটে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন টম ব্রুস ও অধিনায়ক শুভাগত হোম।

তবে তাদের ক্রিজে স্থায়ী হতে দেননি শেখ মেহেদী হাসান। ২৪ বলে ২৪ করে ব্রুস আর ১৯ বলে ২১ রান করে ইনিংসের ১২তম ওভারে আউট হন তারা। জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ৪৯ বলে ১১০ রান। একপ্রান্ত আগলে ধরে ঝড় তোলেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার রোমারিও শেফার্ড। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে তাকে সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন জিয়াউর রহমান। ১৫ বলে ১৫ রান করে ইনিংসের ১৭তম ওভারে আউট হন তিনি। ১৪ বলে যখন দলের জয়ের জন্য ৬১ রান দরকার ছিল তখন কিছুটা চমক দেখান শেফার্ড। পরবর্তী ৮ বলের মধ্যে ৪টি ছক্কা ও ১টি চারের সাহায্যে দলকে এনে দেন ৩০ রান। শেষ ওভারে দরকার পড়ে ২৯ রান। কিন্তু এ ওভারে সাগরিকা পাড়ে মঞ্চায়িত হয়নি কোনো নাটক। তাতে ১৮ রানের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম। তাদের আক্ষেপ হতে পারে শেফার্ডকে আগে না নামানো নিয়েও। ৩০ বলে ৬ ছক্কা ও ৫ চারে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন এ ক্যারিবীয়। রংপুরের পক্ষে ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন প্রিটোরিয়াস। ৮.৫০ ইকোনমিতে ২ উইকেট নেন শেখ মেহেদী।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ ‍উইকেট হারিয়ে ১৮৭ রান সংগ্রহ করে রংপুর। টানা দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন সাকিব আল হাসান। আগের ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ৬৯ রান করা টাইগার অলরাউন্ডার এদিন ৩৯ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৬২ রান। এছাড়া ১৭ বলে ৪ ছক্কায় ৩৪ রানের দারুণ ইনিংস উপহার দেন শেখ মেহেদী। এনিয়ে আসরে টানা সপ্তম জয় তুলে নিল রংপুর। ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান পোক্ত করেছে তারা। বাকি থাকা দুই ম্যাচ হারলেও তাদের প্লে অফের পথে বাধা হতে পারবে না কেউ। ১০ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে থাকা চট্টগ্রাম টানা তিন হারে দৌড় থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। বাকি ২ ম্যাচ তাদের জন্য বাঁচা-মরার। পরের দুই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ দুর্দান্ত ঢাকা ও খুলনা টাইগার্স।