কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের (কুসিক) মেয়র পদে উপনির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের চার প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তারা। এদিন সকাল ১০টায় কুমিল্লা সিটির সাবেক দুইবারের মেয়র ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কুর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়।

এ সময় তিনি না এলেও তার পক্ষে অ্যাডভোকেট আতিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তারেক আবদুল্লাহ, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা, বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম মাসুক, হুমায়ুন কবিরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এসে
মনোনয়নপত্র জমা দেন।

মনিরুল হক সাক্কুর প্রতিনিধিরা চলে যাওয়ার পরপরই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন বিএনপির আরেক বহিষ্কৃত নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি গত নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকে প্রতিদ্বন্ধিসঢ়;দ্বতা করেছিলেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন নিজাম উদ্দিন কায়সার।

তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের ওপর আমাদের আস্থা নেই। কিন্তু মানুষের চাপে নির্বাচনে এসেছি। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন মহানগর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের মেয়ে ডা. তাহসিন বাহার সূচনা। সূচনা তার মা মেহেরুন্নেছা বাহারকে সাথে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সূচনা বলেন, আমার বাবার আদর্শে বড় হয়েছি। কুমিল্লার মানুষ আমার বাবাকে বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন, আমাকেও তারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। আমি নির্বাচিত হলে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনকে একটি অত্যাধুনিক সিটি হিসেবে গড়ে তুলব।

ডা. তাহসিন বাহার সূচনা মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে চলে যাওয়ার পরপরই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম। দুপুর দেড়টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি ৪০ বছর ধরে এই শহরে রাজনীতি করছি। এ শহরের ধুলোবালির সাথে আমার বেড়ে ওঠা। এই শহর নেতৃত্বহীন হয়ে আছে। এক জাতীয় দানবীয় শাসন চলছে এই শহরে। শহরের মানুষ এসব থেকে মুক্তি চায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ তিনি এ নির্বাচনে প্রার্থী উন্মুক্ত রেখেছেন। আপনারা দেখেছেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬০ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রার্থী একজন নয়, দুইজন। আগামী ৯ মার্চ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কুমিল্লার মানুষ আমাকে অবশ্যই বিজয়ী করবে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৫ জুন কুসিকের তৃতীয় নির্বাচনে আরফানুল হক রিফাত ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়র রিফাতের মৃত্যু হয়। ১৮ ডিসেম্বর মেয়র পদটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি। যাচাই- বাছাই ১৫ ফেব্রুয়ারী। আপিল নিষ্পত্তি ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারী। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ ফেব্রুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ ফেব্রুয়ারি। ভোটগ্রহণ ৯ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বর্তমানে কুমিল্লা সিটিতে দুই লাখ ৪২ হাজার ভোটার রয়েছে।

বার্তা বাজার/জে আই