কুখ্যাত মামা পার্টির মূলহোতা শাহীন রানা ওরফে তজ্জমসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। দেখতে নিরীহ ও সাদাসিধা মনে হলেও প্রত্যেকেই তাদের পেশার আড়ালে ভয়ংকর অপরাধী জানিয়ে র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক এ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, অল্প কিছু টাকার জন্য চক্রটির সদস্যরা কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করতেও পিছপা হতেন না। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- খুলনার মো. রানা ওরফে মো. শাহীন ওরফে শাহীন রানা ওরফে তজ্জম (৪৯), শরীয়তপুরের মো. মফিজুল ইসলাম ওরফে মো. ইসলাম ওরফে ইসলাম মিয়া (৪৮) ও মো. আবুল কালাম (৫৩), মাদারীপুরের মো. সাগর ওরফে হাবিবুর রহমান শেখ ওরফে মো. হাবিব (৫১) এবং মৌলভীবাজারের মো. ফারুক আহমদ ওরফে মো. ফারুক মিয়া ওরফে মো. ফারুক (৩৪)।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, কখনো যাত্রী সেজে অন্যের গাড়িতে উঠে ছিনতাই, আবার কখনও অন্য যাত্রীর সর্বস্ব লুট করতে সিদ্ধহস্ত এ চক্রের ১০ সদস্য। সবশেষ দুইদিন আগে এক ব্যক্তি নরসিংদী থেকে ঢাকায় আসার পথে এই চক্রের টার্গেটে পরিণত হন। বর্তমানে মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

এর আগে গত বছরের ২৬ জুন ফরিদপুরের সাদ্দাম শেখের অটোরিক্সায় যাত্রীবেশে উঠে এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করে চক্রটির সদস্যরা। এরপর ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ছিনতাই করে পালায় তারা।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, প্রথমে মামা ডেকে সালাম দিয়ে পরিচিত হয়ে পরে কথোপকথনের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ হতেন চক্রটির সদস্যরা। আর এর মধ্যেই সুবিধাজনক সময়ে নেশাদ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে সর্বস্ব লুটে নির্জন জায়গায় ফেলে রেখে যেতেন তারা।

মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, চক্রটির সদস্যরা যাত্রীদেরকে মামা বলে সম্বোধন করতেন। বেশিরভাগ সময় তারা ভোর রাতে বের হতেন। তারা যখন প্রাইভেটকার নিয়ে যেতেন, তখন রাস্তার মধ্যে কোনো যাত্রীকে উঠাতেন। বাকিরা যাত্রী হিসেবে বসে থাকতেন। যাত্রীকে টার্গেট করে তারা পথের মধ্যে চেতনানাশক খাইয়ে নির্জন রাস্তায় নিয়ে কখনো ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নিতেন। পরে নির্জন জায়গায় ফেলে যেতেন।

তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত পাঁচজনের মধ্যে ফারুক আহমেদ নিয়মিত উবার সার্ভিসে গাড়ি চালান অথচ তার বিরুদ্ধে চুরি ও ডাকাতির দুইটি মামলা রয়েছে। শুধু তাই নয়, গ্রেফতারকৃত প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা রয়েছে এবং বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয়ে জামিনে বের হয়ে আবারও তারা অপরাধে জড়াচ্ছে।

চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

বার্তা বাজার/ জে আই