দরজায় কড়া নাড়ছে এসএসসি পরীক্ষা। আর মাত্র ১১ দিন পর (১৫ ফেব্রæয়ারী) থেকে সারাদেশে অনুষ্ঠিত হবে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (এসএসসি)। আর ঠিক তার আগেই সাতক্ষীরার দেবহাটার উপজেলার জেলিয়াপাড়া ফুটবল মাঠে বসানো হয়েছে সার্কস প্যান্ডেল। এলাকার চিহ্নিত জুয়াড়ি ও মাদকসেবী কয়েকজনের প্রচেষ্টায় প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে এ সার্কাসের অনুমোদন করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম ওরফে বুড়ো আনারুলের উদ্যোগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে পারুলিয়া জেলিয়া পাড়া মাঠে মাসব্যাপী সার্কাসের আড়ালে জুয়ার আসরের আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে সময় জেলার ২ শীর্ষ প্রশাসনের অনুমতি মিললেও নির্বাচনের কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। পরবর্তীতে আবারও দৌড় ঝাঁপ করে অনুমতি মেলে। কিন্তু সেখানে অসামাজিক নাচ-গান, জুয়া, মাদকের বিষয়ে নিষেধজ্ঞা ধাকলেও সার্কাসের আড়ালে এসব গোপন আয়োজনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার পহেলা ফেব্রæয়ারী রাত থেকে এই সার্কাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে একদিন পিছিয়ে শুক্রবার থেকে শুরু হয়। গোধূলি বেলা থেকে শুরু হয় সার্কাসের কার্যক্রম। সন্ধ্যা হলেই উচ্চ সাউন্ডে গান সহ মিউজিক। দর্শক আকর্ষণ করতে সেখানে রকমারি আলোক সজ্জা করা হয়েছে। সেই সাথে সার্কাস প্যান্ডেলে দর্শক আকর্ষণ করতে সেখানে মনোরঞ্জন দিতে আনা হয়েছে যশোরের বিশেষ এক পল্লীর নত্তর্কীদের। তাদের দেহের হেলে দোলা নাচ প্রদর্শন করে গ্রামীণ মানুষদের যৌনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই সার্কাসের আড়ালে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মাদক ও জুয়ার আসর বসাতে স্থানীয় প্রশাসন সহ বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। সচেতন মহল বলছেন, ফেব্রæয়ারী যেহেতু ভাষার মাস আর কয়দিন পরে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। সেই মুহ‚র্তে এমন আয়োজন এলাকায় শিক্ষার্থী সহ বসবাসকারী নারী পুরুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে। শিক্ষার্থীরা যেমন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ব্যার্থ হবে। তেমন এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থির অবনতি হবে। এছাড়া চুরি, ছিনতায়ের মত ঘটনা বেড়ে যেতে পারে। এমনকি অশ্লীল নাচের প্রভাব এলাকার নারীদের উপর খারাপ প্রভাব পড়বে। তাই পরীক্ষার পূর্ব মুহ‚র্তে এমন আয়োজন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এবিষয়ে আয়োজক কমিটির আনোয়ারুল ইসলাম জানান, দর্শকদের জন্য ৮০ টাকা, ১০০ টাকা এবং ১২০ টাকার টিকিট ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্যান্ডেলের ভিতরে যাতে অভদ্র না হয় সে জন্য ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। অনেক টাকা খারচ করে আয়োজন করেছি। টাকা তোলার জন্য বাকি আয়োজনের চেষ্টা চলছে।
দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ সেখ মাহামুদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কোন প্রকার জুয়া বা মাদকের বিষয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় নেই। কোন ধরনের খারাপ কিছু হলেই আমাকে জানালে সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন তদবির বা প্রলোভনে কাজ হবে না।

দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, যেহেতু অনুমোদনের বিষয়টি জেলা প্রশাসন মহোদয় দেন। যদি কোন ধরণের অভিযোগ সামনে আসে, তাহলে জেলা প্রশাসন মহোদয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।