ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ধানের জমিতে সেচ মেশিনের পানি দেওয়াকে কেন্দ্র করে শামছুল মোল্যা (৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার আপন ভাতিজাদের বিরুদ্ধে।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের যোগিবরাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামছুল মোল্যা ওই গ্রামের মৃত ইন্তাজ উদ্দিন মোল্যার ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শামছুল মোল্যা ও তার বড় ভাই মো. নওশের মোল্যার ছেলে শাহিদুল মোল্যা কৃষকদের ইরি ধানের ব্লকে সেচ মেশিনের মাধ্যমে পানি দেয়। সম্প্রতি একই এলাকার প্রতিবেশী গোলাম সরোয়ারের ছেলে রফিকুল ইসলামের জমিতে সেচের পানি দেওয়াকে কেন্দ্র করে চাচা শামছুল মোল্যা ও ভাতিজা শাহিদুল মোল্যার সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের জের ধরে শনিবার বিকেলে শামছুল মোল্যা ও তার ছেলে মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের সাথে বড় ভাই নওশের মোল্যার চার ছেলে মো. মতিয়ার মোল্যা, মনিরুল মোল্যা, শাহিদুল মোল্যা ও ইলিয়াস মোল্যার কথা কাটাকাটি হয়। পরে রাত ৮টার দিকে মসজিদে এশার নামাজ শেষে শামছুল মোল্যা ও তার ছেলে আব্দুল্লাহ বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে নওশের মোল্যার ছেলেরা তাদের ওপর আক্রমণ করে। আত্মরক্ষায় তারা দৌঁড়ে নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় নিলে মতিয়ার ও মনিরুল ঘরে ঢুকে আব্দুল্লাহ্কে না পেয়ে চাচা শামছুল মোল্যার ওপর হামলা চালায়। এ সময় ভাতিজা মতিয়ার মোল্যার লাথির আঘাতে ছিটকে পড়ে জ্ঞান হারায় চাচা শামছুল মোল্যা। পরে পরিবার ও আশপাশের লোকজন তাকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শামছুল মোল্যাকে মৃত ঘোষণা করে।

নিহতের মেয়ে আঁখি আফরোজ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘প্রতিবেশী রফিকুল ইসলামের ইন্ধনে আমার চাচতো ভাইয়েরা পরিকল্পিতভাবে মারপিট করে আমার বাবাকে হত্যা করেছে। কারণ রফিকুল ইসলাম তার জমিতে একবার আমার বাবাকে সেচ দিতে বলেছে। অপরদিকে আমার চাচাতো ভাইকেও সেচ দিতে বলে আমাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি করেছে। আমি আমার বাবা হত্যার বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তমাল কৃষ্ণ চক্রবর্তী জানান, ‘হাসপাতালে আনার আগেই শামছুল মোল্যা মারা যান। তবে মৃতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’

আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সেলিম রেজা জানান, ‘ব্লকে সেচ দেওয়া নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। একজনের মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। মরদেহ থানায় আনা হলে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বার্তাবাজার/এম আই