কুমিল্লার দেবীদ্বারে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর নারীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় দেবীদ্বার পৌর এলাকার চাপানগর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, জমিসংকান্ত বিরোধে পূর্ব শত্রুতার জেরধরে চাপানগর গ্রামের দক্ষিণ পাড়া মৃত আফাজ উদ্দিন ও তার ভাই আবু মিয়ার ওয়ারিশদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় রুহুল আমিনের ছেলে মোশাররফ হোসেন (২২) সাইকেল চালাতে যেয়ে শাহজাহানের ভাগিনা আমির হোসেনের গায়ে ধাক্কা লাগে।

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে পূর্ব বিরোধ নতুন করে নাড়া দেয়। দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারি, বাড়িঘরে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৩০ জন নারী-পুরুষ আহত হন। আহতদের দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।

ধারালো অস্ত্রের কুপের আঘাতে মাথা ফাটাসহ মারাত্মক আহতদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় চাপানগর গ্রামের মৃত- আফাজ উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন (৪৩), মো. আলম (৪০) আলমের স্ত্রী আয়শা বেগম(৩৮), রুহুল আমিনের পুত্র মো. মোশাররফ হোসেন (হাসান) (২২), আবু মিয়ার পুত্র মো. শাহজাহান(৪৫), মো. শাহজালাল (৪০), ভাগিনা আমির হোসেন (২৩), সাহিদ (২২), শাহজাহানের স্ত্রী কুলসুম বেগম(৩৭), বড় বোন নাজমা বেগম (৪৮)সহ ১০ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নাম না প্রকাশের শর্তে চাপানগর গ্রামের একাধিক সালিশদার জানান, চাপানগর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার মৃত আফাজ উদ্দিন ও তার ভাই আবু মিয়ার ওয়ারিশদের মধ্যে ৭ শতাংশের জমির মালিকানা নিয়ে দির্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। বর্তমানে ওই জমিটি আফাজ উদ্দিনের পুত্র রুহুল আমিন ও তার ভাইদের দখলে রয়েছে। এ নিয়ে গ্রামে একাধিক সালিস বসলেও কোন পক্ষই নিষ্কন্টক কাগজ-পত্র দেখাতে না পারায় সালিসে সমাধান হয়নি। আজ সাইকেল চালানো নিয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এখন এটাকে সংসদ নির্বাচনের ‘নৌকা’- ‘ঈগল’ প্রতীকের সমর্থকদের দ্বন্দ্ব বলে রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার চক্রান্ত চলছে।

এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নয়ন মিয়া জানান, এক পক্ষের লোক সাইকেল চালানোর সময় অপর পক্ষের লোকের গায়ে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে পূর্বে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের সামনে চলে আসে। সংঘর্ষ-মারামারিতে উভয় পক্ষের বেশ কিছু লোক আহত হয়, আহতদের কয়েকজনকে কুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এটা কোন রাজনৈতিক সহিংসতা নয়। কোন পক্ষই এখনো থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

বার্তাবাজার/এম আই