ঢাকার কেরানীগঞ্জে ফসলের মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। দিগন্তজুড়ে হলুদ ফুলে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে কৃষক। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সরিষা মাঠ জুড়ে ভিড় করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ ও শিশুসহ বিনোদন প্রেমিরা। সরিষা মাঠ ঘুরে ঘুরে দেখছেন। কেউবা আবার মোবাইলফোনে সেলফি তুলছেন।

ছবি তোলছিলেন প্রকৃতি প্রেমী আয়েশা আক্তার। তিনি বলেন, প্রকৃতি আমার খুব পছন্দ। তাই হলুদের রাজ্য নিজের হাড়াতে এসেছি। চোখ যত দূর যায় তত দূর শুধু হলুদ আর হলুদ। গত বছরও নানু বাড়ি এসে এখানে ঘুরতে এসেছিলাম। তবে গতবারের থেকে এবার একটু বেশি ভালো লাগতেছে। তারাছাড়া ফুলের এমন অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে রোজই হাজির হচ্ছেন আমার মতো অনেক প্রকৃতি প্রেমীরা।

কৃষকেরা জানায়, এক বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে (হাল, বীজ, সার) খরচ হয় ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। এক বিঘা জমিতে ৭ থেকে ৮ মণ সরিষা পাওয়া যায়। প্রতি মণ দাম দাঁড়ায় ৩ হাজার ২০০ টাকা। আর বিঘায় খরচ বাদে লাভের পাশাপাশি নিজেদের তেলের চাহিদাও পূরণ হয়। আবহাওয়া ভাল থাকলে সময় মতো সরিষা ঘরে তুলতে পারবে। এ বছরের মতো আগামীতে ভালো দাম পাবেন বলে তাদের আশা।

সরিষা চাষী বিল্লাল মিয়া বলেন, প্রায় ৫ বছর ধরে সরিষার আবাদ করি। উন্নত বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করে বিঘাপ্রতি ছয়-সাত মণ ফলন পাচ্ছি। আর লাভবান হওয়ায় এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে উন্নত বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করছেন। ফলনও ভালো দেখা যাচ্ছে।

নাছির উদ্দিন বলেন, আমি এবছর প্রথম বারি ১৮ জাতের সরিষা চাষ করেছি। বারি সরিষা ১৮ তেলের স্বাদ অন্য যেকোনো তেলের তোলনায় ভালো। পুস্টিগুনেও সমৃদ্ধ। বিগা প্রতি ফলন ৯-১০ মন অন্যান্য জাতের সরিষার চেয়ে বেশী। এতে তেলের পরিমাণও অন্যান্য সরিষার থেকে বেশী প্রায় ৪৬ থেকে ৪৭ ভাগ। এর গাছ বেশ বর ও শক্ত হয়। ফলে বাতাসে হেলে পরে না। ফলন ভালো হলে। আগামীতেও আমি অন্য জাতের সরিষার পাশাপাশি এই জাতের সরিষা আবাদ করবো।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মহুয়া সারমিন মুনমুন বার্তা বাজারকে বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। এ বিষয়ে কৃষকদের আমারা সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছি। ইতিমধ্যে ১ হাজার ৫০০ কৃষককে সরিষার বীজ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। চলতি মৌসুমে কেরানীগঞ্জে ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে।

বার্তাবাজার/এম আই