ব্যস্ত নগরী ঢাকা শহরের বড় বড় অট্টালিকার ভিড়ে আকাশে নজর একটু কমই পড়ে। ঘুড়ি উড়ানোর মাধ্যমে পৌষ মাসকে বিদায়ের উপলক্ষে নীল আকাশের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য পুরাণ ঢাকাবাসীর আয়োজন সাকরাইন উৎসব যা ঘুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত।

সাকরাইন উপলক্ষে পুরান ঢাকার প্রতিটি বাসাবাড়ির ছাদ সাজানো হয়েছে বাহারি রঙের আলোকসজ্জায়। সকাল থেকেই উচ্চস্বরে হচ্ছে গান-বাজনা। সেই সঙ্গে রয়েছে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে হালের ডিজে পার্টির আয়োজন

শহর ভিত্তিক দিনটি উৎসবমুখর ভাবে পালন না হলেও গ্রাম বাংলায় বাড়িতে বাড়িতে দিনটি পালিত হয়ে থাকে নানান আয়োজনে। উৎসবটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হলেও বহু বছর ধরে পুরান ঢাকায় সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে সাকরাইন উৎসব। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসবকে ‘পৌষ সংক্রান্তি’ বা ঘুড়ি উৎসবও বলা হয়ে থাকে। প্রায় ২০০ বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে বয়ে চলছে পুরান ঢাকরা সাকরাইন বা ঘুড়ি উৎসব।

সংস্কৃত শব্দ ‘সংক্রান্তি’ ঢাকাইয়া অপভ্রংশে সাকরাইন রূপ নিয়েছে। পৌষ মাসের শেষ দিনে এই সাকরাইন উৎসব আয়োজন করা হয়। তবে বাংলা ক্যালেন্ডার ও পঞ্জিকা তারিখের সঙ্গে কিছুটা পার্থক্যের কারণে প্রতি বছর দুই দিনব্যাপী এই উৎসবটি পালন করেন পুরান ঢাকা বাসিন্দারা।

তবে রাজধানীর পুরান ঢাকায় এই উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়। সবাই মাতে সাকরাইন উৎসবে। মুঘল আমল থেকে এই উৎসব সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে পুরান ঢাকায়। পুরান ঢাকা এলাকার মানুষ এ উৎসবে দিনব্যাপী ঘুড়ি ওড়ান।

সাকরাইনকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে এক সপ্তাহ আগে থেকেই। পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, লালবাগ ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোর মানুষেরা সাকরাইন উৎসব পালন করে।

পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের মতে, এখন ভ্রাতৃত্ব কমে গেছে। তরুণরা সাকরাইনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। ডিজে পার্টি ও আতশবাজির কারণে সাকরাইন ঐতিহ্য হারিয়েছে। ডিজে পার্টি কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে।

বার্তাবাজার/এম আই