মুক্তিযুদ্ধকালীন কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুস সোবহানকে রাষ্ট্রীয় গার্ড অফ অনার প্রদানের পর চির নিন্দ্রায় শায়িত করা হয়েছে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় তাঁর প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জানাযার নামাজের পূর্বে রাষ্ট্রের পক্ষে গার্ড অফ অনার প্রদান করেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানবির হোসেন ও উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শামীম হোসেনসহ চৌকস টিম।
এরপর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, প্রশাসনিক ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পক্ষ থেকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হয়। এরপর জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে চির নিন্দ্রায় শায়িত করা হয়। জানাযা পূর্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আব্দুস ছোবাহানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারণমুলক বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ শাহজাহান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল আবছার, উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী, রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, রত্নাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার পরিমল বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল কাশেম, হলদিয়ার সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল হক আমিনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।
মুক্তিযুদ্ধে ১ নম্বর সেক্টরের অধীনে আব্দুস সোবহান কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার সাব সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। কয়েকটি সম্মুখযুদ্ধে তাঁর নেতৃত্ব পরিচালিত মুক্তিযোদ্ধাদের দলটি বীরত্বপূর্ণ সফলতাও পান। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য স্বাধীনতা লাভের পর সরকার তাঁকে সেনাবাহিনীর সম্মানসূচক ‘ক্যাপ্টেন’ পদমর্যাদার স্বীকৃতি দেন।
মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর আব্দুস সোবহানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল জিপগাড়ী নিয়ে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে কক্সবাজার শহরে প্রবেশ করে। ওইদিন বিকালে ঐতিহাসিক কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরী ও ইন্সটিটিউটের শহীদ দৌলত ময়দানে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে কক্সবাজারকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন তিনি।
শুক্রবার রাত ৯ টায় কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম মরিচ্যার নিজ বাসভবনে তিনি পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮২ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত নানান রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ পুত্র ও ৪ কন্যাসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
বার্তাবাজার/এম আই