ঘড়ির কাটায় সময় সকাল ১০টা বেজে ১২ মিনিট। উত্তোলন করা হয়নি জাতীয় পতাকা। উপস্থিত নেই কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থী। ১০টা ১২ মিনিটে অফিস কক্ষের তালা খুললেন এক সহকারী শিক্ষিকা। ১০টা ২২ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন প্রধান শিক্ষক। স্থানীয়দের অভিযোগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ ভাইয়ের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের উদাসীনতায় দায়সারা ভাবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।

সোমবার (০৮ জানুয়ারি) নীলফামারী ডিমলা উপজেলার পূর্ব আকাশ কুঁড়ি চিলাখাল পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। অথচ নিয়মানুযায়ী সকাল ৯টার মধ্যে বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরর উপস্থিত থাকার কথা।

দেখা গেছে, সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙল প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা ও গতকাল নির্বাচন কর্মী হিসেবে ভোটারদের টোকেন বিতরণের কাজ করেছেন পূর্ব আকাশ কুঁড়ি চিলাখাল পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোছাঃ রওশন আরা বেগম। বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা খাতায় যথাসময়ে উপস্থিত দেখিয়ে নির্বাচনকালীন দীর্ঘ সময় নিজ ভাইয়ের লাঙল প্রতীকে ভোট চেয়েছেন তিনি। গতকাল অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেকে লাঙল প্রতীকের সাপোর্টার দাবি করে লাঙল প্রতীকের ভোট চেয়ে ভোটার স্লিপ লিখে দিতে দেখা গেছে ওই প্রধান শিক্ষককে‌। এছাড়াও ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ যথা সময়ে না আসার কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলক।

সহকারী শিক্ষিকা আল-জান্নাতুন নূর বলেন, প্রদান শিক্ষক হোম ভিজিটে পাঠিয়েছেন। হোম ভিজিট শেষ করে বিদ্যালয়ে (উপস্থিত সময় ১০:১২ মিনিট) এসে তালা খুললাম।

প্রধান শিক্ষক মোছাঃ রওশন আরা বলেন, আপনাকে কে পাঠিয়েছে? গতকাল নির্বাচন হলো আমার ভাই হেরে গেলেন আর আজকে আপনি আসলেন। আমার ভাই লাঙল প্রতীকে নির্বাচন করেছে‌। বাসায় অনেক আত্মীয়-স্বজন আসছে সেজন্য বিদ্যালয়ে আসতে দেরি হয়েছে।

অনুপস্থিত শিক্ষকদের বিষয়ে তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষিকা রত্না রাণী রায় ফোন করে জানিয়েছে তার বাচ্চা অসুস্থ। সেজন্য বিদ্যালয়ে আসতে কিছুটা দেরি হবে। আরেক সহকারী শিক্ষক অনাথ বন্ধি রায় ভোটের ডিউটি করেছেন। তিনিও দ্রুত চলে আসবেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিরেন্দ্র নাথ রায় বলেন, সরকারি চাকুরি করে কোনো প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজ করার সুযোগ নেই। নির্বাচন থাকলেও দেরি করে আসার সুযোগ নেই। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

বার্তাবাজার/এম আই