তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ইহুদিবাদী ইসরাইলের ভয়াবহ আগ্রাসনের শিকার গাজা উপত্যকার চলমান পরিস্থিতিতে ‘মারাত্মক দুঃখ’ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা মার্টিন গ্রিফিতস। তিনি শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গাজা এখন একটি হতাশাভূমি ও মৃত্যুপুরিতে’ পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, গাজায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। যেসব জায়গায় বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ স্থান ঘোষণা করে চলে যেতে বলা হচ্ছে পরবর্তীতে সেসব স্থানেই বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে।

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি ভয়াবহ আগ্রাসনে গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২২,৬০০ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। গাজায় হামাসের নেতৃত্বাধীন সরকারের গণমাধ্যম দফতর বলেছে, গত তিন মাসে গাজার বিভিন্ন স্থানে ৬৫ হাজার টনেরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা নিক্ষেপ করেছে ইসরাইল। ১৯৪৫ সালে মার্কিন সরকার জাপানের হিরোশিমা নগরীতে যে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করেছিল তার তিনগুণ ওজনের বোমা এরইমধ্যে গাজায় নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর নিরবচ্ছিন্নভাবে হামলা চালানো হচ্ছে জানিয়ে গ্রিফিতস বলেন, উপত্যকার হাতে গোনা যে কয়েকটি হাসপাতাল এখনও আংশিকভাবে চলছে সেসব হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রীর মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে এবং এসব স্থানে বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢল নেমেছে।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, এক কথায় গাজার জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বর্জ্য পদার্থ সবখানে ছড়িয়ে পড়ায় জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যে প্রতিদিন প্রায় ১৮০ জন ফিলিস্তিনি নারী সন্তান প্রসব করছেন।

মার্টিন গ্রিফিতস বলেন, গাজাবাসী এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সর্বোচ্চ মাত্রার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয়েছে। পরিস্থিতিকে তিনি ‘দুর্ভিক্ষ প্রায় কাছাকাছি’ বলে বর্ণনা করেন।

তিনি সরাসরি ইসরাইলের নাম উল্লেখ না করে বলেন, যুদ্ধ চালাতে গিয়ে মানবিক পরিস্থিতিকে বিবেচনা করা হচ্ছে না। এ কাণে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা অসম্ভব করে পড়েছে। শিশুদের কাছ থেকে খাদ্য, পানি ও শিক্ষা কেড়ে নেয়া হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। গাজা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে জানিয়ে গ্রিফিতস অবিলম্বে সেখানে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানান।

বার্তা বাজার/জে আই