ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার মোট রিজার্ভের ৩০ হাজার কোটি ডলারের সম্পদ পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে আটকে যায়। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার এসব সম্পদ কীভাবে জব্দ করা যায় সে উপায় বের করতে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি-৭-এ প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো রাশিয়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংকও প্রধান প্রধান বিদেশি মুদ্রা, স্বর্ণ ও সরকারি বন্ডের মতো তরল সম্পদ রিজার্ভ আকারে জমা রেখেছিল। তবে এখন মোট মজুতের প্রায় অর্ধেক পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে আটকা পড়ে আছে। এর অর্থমূল্য ৩০ হাজার কোটি ডলার। তখন রাশিয়ার মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৬১২ বিলিয়ন ডলার।

পশ্চিমাদের হাতে এত পরিমাণ রিজার্ভ আটকা পড়ায় রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এলভিরা নাবিউলিনা দেশে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। আর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অভিযোগ, পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করেছে।

পশ্চিমের বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ রাশিয়ার এসব সম্পদ ইউক্রেন পুনর্গঠনে বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে এমন পদক্ষেপের বিষয়ে বার বার সতর্ক করে আসছে মস্কো।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিনিয়র এক রুশ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, দেখা যাক তারা কী সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যক্তিগত সম্পত্তির সুরক্ষা দেওয়া একটি পবিত্র নীতি। আর তা শত শত বছর ধরে বজায় রয়েছে।

আবার বেশ কয়েক রুশ কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়ার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হলে রাশিয়ায় টাইপ ‘সি’ অ্যাকাউন্টে থাকা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সম্পদের একই পরিণতি হতে পারে। এসব অ্যাকাউন্টে ঠিক কত অর্থ আছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে রাশিয়ান কর্মকর্তারা বলেছেন, ৩০ হাজার কোটি ডলারের সমতুল্য হবে। গত সপ্তাহে রুশ অর্থমন্ত্রী আন্তন সিলুয়ানভও এসব অ্যাকাউন্টে বড় অঙ্কের অর্থ থাকার দাবি করেছেন।

পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেছেন, যদি আমাদের কাছ থেকে কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয় তাহলে আমরা কী বাজেয়াপ্ত করতে পারি সেটা দেখা হবে। আর আমরা সেটা কোনো রকম দেরি না করেই করব।

বার্তা বাজার/জে আই