কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. আবু বক্কর সিদ্দিককে থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আলী মোর্শেদ কাজেমের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১২১তম একাডেমিক সভায় কোর্স ভাগাভাগি নিয়ে বিতর্ক জড়িয়ে পড়লে এ ঘটনা ঘটে। বিভাগটির একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বিভাগের একাধিক শিক্ষক জানান, বিভাগের ১২১তম অ্যাকাডেমিক সভায় কোর্স ডিস্ট্রিবিউশন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা ওঠে। তখন বলা হয় জুনিয়র শিক্ষকগণ ৪টি করে কোর্স নেবেন। কোর্স ডিস্ট্রিবিউশনের শেষ দিকে দ্বিতীয় সেমিস্টারের একটি কোর্স নিয়ে আবু বক্কর সিদ্দিক এবং আলী মোর্শেদ কাজেম বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে আলী মোর্শেদ কাজেম আবু বক্কর সিদ্দিককে থাপ্পড় মারেন। পরে আবু বক্কর সিদ্দিক নিজেকে রক্ষা করে পেছনে সরে আসেন। এ সময় আমরা বিভাগের শিক্ষকগণ কাজেমকে রুম থেকে বের করে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷ এ ঘটনায় মর্মাহত হয়ে এক নারী শিক্ষক কান্নারত অবস্থায় কক্ষ থেকে বের হয়ে যান।

কয়েকজন শিক্ষক যোগ করেন, এর আগেও বিভিন্ন সময় অ্যাকাডেমিক মিটিং দুজন তর্কে জড়িয়ে ছিল, কিন্তু গায়ে হাত তোলার মতো ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে বিভাগটির প্রধান আবু বক্কর সিদ্দিক সোহেল বলেন, প্রতিবেদন করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে আমি মনে করি না। এটি বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যথাযথভাবে আমরা কোর্স ডিস্ট্রিবিউশন করতে পেরেছি। সে ক্ষেত্রে বাড়তি কোনো কিছু হয়েছে বলে আমি মনে করি না।

তিনি আরও জানান, থাপ্পড় মারার মতো কোনো ঘটনা ঘটেছে আমি বলব না। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমরা সমাধান করে ফেলেছি। এ ধরনের কোনো কিছু ঘটেছে বলে আমি বিবৃতি দেব না। বিভাগ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সমাধানও হয়ে গেছে। এ রকম ঘটনা প্রত্যকটা বিভাগে হয়ে থাকে। যেহেতু সমাধান করে ফেলেছি, তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করব না। যদি আপনাকে কেউ অভিযোগ করে থাকে, আপনি সোর্সের নাম বললে আমি তার সূত্র ধরে কিছু বলতে পারি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির একজন সাবেক সাধারণ সম্পাদক এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী জানান, এ ঘটনা আমিও শুনেছি। রিটেন কোনো কমপ্লেইন এলে কথা বলতে পারতাম। তবে বিষয়টি আমি যতটুকু শুনেছি, একজন সহকর্মীর সঙ্গে এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি অবশ্যই নিন্দনীয় কাজ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে আমি জানি না। যেহেতু এ বিষয়ে কিছু জানি না, তাই আমি মন্তব্য করতে পারব না।

এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষক আবু বক্কর মাসুমের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আইন বিভাগে গিয়ে অভিযুক্ত আলী মোর্শেদ কাজেমকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে বিভিন্ন নাম্বার থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, এ বিষয়ে আমরা অফিসিয়ালি কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বার্তা বাজার/জে আই