আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সোমবার আয়োজন করা হয় গণবিয়ে। এতে ৫০টি দম্পতি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দারিদ্র্যপীড়িত দেশটিতে প্রচলিত বিয়ের খরচ অনেক বেশি। তাই খরচ কমাতে এমন আয়োজন করা হয়।

এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। কাবুলে অনেক বিলাসবহুল বিয়ের হল আছে। তার একটিতে আয়োজন করা হয় এই গণবিয়ে। এর উদ্দেশ্য ছিল খরচটা কিছুটা কমিয়ে আনা। ২০২১ সালের ১৫ই আগস্ট ক্ষমতায় ফেরে তালেবান সরকার। তারপর থেকেই বিয়ের অনুষ্ঠান হয় অনেকটা নীরবে, চুপিসারে। খুব জাকজমক হয় না। নাচগান নিষিদ্ধ। এসব বিষয়কে অনৈসলামিক বলে ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন সরকার।

বিমানবন্দরের কাছে সিটি স্টার বিয়ের হলের সামনে শ’ খানেক পুরুষ স্যালোয়ার কমিজ পরা। তাদের ভিতর একজনও নারী উপস্থিত নেই। তারা সবুজ ফিতা এবং প্লাস্টিকে তৈরি লাল গোলাপ দিয়ে সাজাচ্ছিলেন গাড়ি।

নববিবাহিতদের বহন করার জন্য এসব ফুল দিয়ে হার্টের আকৃতি দিচ্ছিলেন গাড়িতে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে সেখান থেকে বেরিয়ে যাবেন রুহুল্লাহ রেজাই (১৮)। তিনি বলেছেন, একার পক্ষে বিয়ে আয়োজন তার জন্য সম্ভব নয়। তার ভাষায়, বিয়ের অনুষ্ঠান করতে গেলে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই লাখ আফগানিস মুদ্রা খরচ করতে হবে। সেই খরচ এখন এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১০ থেকে ১৫ হাজারে নেমে এসেছে।

ঘোর প্রদেশের সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায়ের এই যুবক প্রতিদিন কঠিন কাজ করে খুব কষ্টে আয় করেন ৩৫০ আফগানিস। বলেছেন, আমাদের দুই পরিবারের ৩৫ জন অতিথিকে দাওয়াত করেছি। আলাদা অনুষ্ঠান করতে গেলে এই সংখ্যা হতো ৩০০ থেকে ৪০০। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে সেলাব ফাউন্ডেশন। তারা প্রতিটি দম্পতির কাছ থেকে ১৬০০ ডলার বা তার সমমূল্যের অর্থ নিয়েছে। তারা উপহার হিসেবে দিয়েছে একটি কেক, একটি টুথপেস্ট, শ্যাম্পু ও ময়েশ্চারাইজার, একটি কার্পেট, কম্বল এবং বিবাহিত জীবন শুরুর জন্য টুকিটাকি গৃহস্থালির জিনিসপত্র।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রমোশন অব ভার্চ্যু অ্যান্ড প্রিভেনশন অব ভাইস মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা। তিনি পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের পর বক্তব্য রাখেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে বরদেরকে রাখা হয় আলাদা এক স্থানে। বিয়ে পড়ানোর পর পাত্রীদের সঙ্গে তারা একত্রিত হন। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। সোমবারের এই বিয়েতে যোগ দিয়েছিলেন ৬০০ দম্পতি।

বার্তাবাজার/এম আই