বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে সংসদ নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ না হয় তাহলে জাতীয় জীবনে বিড়ম্বনা দেখা দেয় এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু ২০শে ডিসেম্বর ২০১৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছিলো তা অবাধ ও নিরপেক্ষ ছিলো না। এ ব্যাপারে আমি নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য জনাব মাহবুব তালুকদারের কথা উল্লেখ করছি।

তিনি বলেছিলেন, পার্লামেন্ট নির্বাচন লজ্জাজনক ছিল এবং জনাব কামাল হোসেন তিনি মরহুম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর দীর্ঘদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন বলেছিলেন, এ নির্বাচন প্রহসন এবং পুনরায় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের আহ্বান করেছিলেন।

এ ছাড়া পলিটিক্যাল সায়েন্টিস্ট আলী রীয়াজ বলেছিলেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ ছিলো না এবং বিবিসি বৃটেনের সংবাদ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছিল যে, ভোট রিগ্গিং করেছিলো আওয়ামী লীগ কর্মীরা । বিবিসি জার্নাল ছবি ছেপেছিলো যে, ব্যালট বক্স ভর্তি করা হয় নির্বাচনের আগের রাতে চট্রগ্রামে। ইতিমধ্যে আমেরিকা সুষ্ঠু পরিবেশ ও জাতীয় সমস্ত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ দেখতে চায় এবং UN অনুরূপ মতামত রেখেছে। ২২ জানুযারী ২০২৩, জাতিসংঘ আবারও বলেছে যে, নির্বাচন পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত ও অবাধ নির্বাচন দেখতে চায়।

ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও জামায়াত -ই -ইসলাম জাতীয় সংসদ ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে। কোনো রাজনৈতিক দল প্রতিবাদ করেনি।

সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিলো। আবারও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং জামায়াত-ই -ইসলাম সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মতামত রেখেছে, কিন্তু নির্বাচন করবে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে। আওয়ামী লীগ ইলেকশন পরিচালনা করলে ৭ জানুয়ারি ২০২৪ সালের নির্বাচন হবে, এতে কোনো সন্দেহ নাই। দেশে ও বিদেশে সমালোচনার ঝড় বইবে। ইতিমধ্যে আমেরিকা নতুন ভিসা প্রদান সংক্রান্ত সিদ্বান্ত গ্রহণ করেছে। এই সিদ্বান্ত বাংলাদেশের নির্বাচন সংক্রান্ত। আমেরিকা ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানাবে যে ভোট প্রদানে বাধা দিবে এবং যে অবাধ বক্তব্যে বাধা দেবে এবং মুক্ত সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করবে। এই ভিসা পদ্ধতি বাংলাদেশ সরকারের অফিসার, ল’ ইনফোর্সমেন্ট অফিসার ও জুডিশিয়ারি অফিসারের জন্য প্রযোজ্য। ইতিমধ্যে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ পরিবেশে অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছেন। ২২ ডিসেম্বর গণতন্ত্র মুক্তমঞ্চ থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, নির্বাচন বাতিল করতে এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে পুনরায় নুতুন তফসিল ঘোষণা করতে।

সম্ভবত : প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত শেখ হাসিনার সরকার পুনরায় বহাল হোক দেখতে চায়।

লেখক- অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নোভা টোস্টমাস্টার আন্তর্জাতিক ক্লাব,ভার্জিনিয়া, আমেরিকা।

বার্তাবাজার/এম আই