সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার রাস্তার ইট তুলে নিয়ে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরীর বিরুদ্ধে।মী

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে অর্ধশতাধিক জনবল নিয়ে ইউনিয়নের শালিখেডাঙা-কুলপোতা আঞ্চলিক সড়কে এলজিডির অর্থায়নে নির্মিত ওই সড়কের ইট তুলে নিয়ে বিক্রি করতে থাকেন তিনি। খবর পেয়ে সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে যেয়ে ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করলে সাংবাদিকের অবরুদ্ধ করে রাখেন চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী। এসময় সাতক্ষীরার দৈনিক পত্রদূত ও ঢাকার দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকার প্রতিনিধি নাজমুল শাহাদাৎ জাকিরের ফোন কেড়ে নিয়ে সকল প্রমাণ মুছে ফেলেন তারা।

জানা যায়, ২০১৭ সালে এলজিইডির অর্থায়নে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে বেদনা নদীর তীর ঘষা ধুলিহর ইউনিয়নের শালিখেডাঙা-কুলপোতা সড়ক নির্মাণ করা হয়। এবং সড়কের শালিখেডাঙা নামক স্থানে বেদনা নদীর ধারের খাস জমিতে মুজিব বর্ষের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সেখানে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার বসবাস করেন। তবে ক্ষমতার জোরে ইউপি চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরী নিজের সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে ওই সড়কের ইট তুলে নিয়ে বিক্রি করতে থাকেন। কেন বা কিসের জন্য এই ইট তুলে নিয়ে বিক্রি করছেন চেয়ারম্যান? সেব্যাপারে কোনকিছু জানেননা স্থানীয়রা।

সরেজমিনে শালিখেডাঙা-কুলপোতার ওই সড়কে যেয়ে দেখা যায়, অর্ধশতাধিক শ্রমিক তড়িঘড়ি করে সরকারি রাস্তার ইট তুলছেন। আর এদের অনেকে ইট একটি ট্রলিতে করে বেতনা নদীর তীরে নিয়ে যাচ্ছেন। আর সেখান থেকে ভালো ইটগুলো ট্রলি প্রতি বিক্রি করছেন চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরী লোকজন।

এব্যাপারে ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাজমুল শাহাদাৎ জাকির বলেন, সাবেক উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার ভাই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরী তার ইউনিয়নে সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। তার ভয়ে কোন প্রতিবাদ করতে পারেননা স্থানীয়রা। এমনকী স্থানীয় সাংবাদিকদেরও জিম্মি করে রেখেছেন চেয়ারম্যান। সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ওইসময় ধুলিহর ইউনিয়নের মৃত আব্দুর রশিদ গাজীর ছেলে আব্দুর রহিম বাবু সংবাদকর্মীর পথ আটকে মুঠোফোন কেড়ে নেন।

এসময় আব্দুর রহমান বাবু সংবাদকর্মীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনি এখানে কেন এসেছেন? আপনার সাহস কীভাবে হয় ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করার? আপনি কী অনুমতি নিয়েছেন? আপনি কী জানেননা এটা চেয়ারম্যানের কাজ। তার ভাই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। আপনার কী প্রাণের ভয় নেই? সহ বিভিন্ন ধরণের উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকেন। এসময় তিনি তার মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে সবকিছু মুছে দিতে থাকে।

এব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকৌশলী ইয়াকুব আলী জানান, বিষয়টা সম্পর্কে কোনকিছু জানতেন না তারা। কেন বা কিসের জন্য রাস্তার ইট তোলা হচ্ছে সে ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আমাদেরকে অবগত করেননি। তাছাড়া আমাদের জানামতে ওই ইউনিয়নে এমন কোন প্রকল্প নেই যার জন্য রাস্তার ইট তুলতে হবে।

এব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভুইয়া চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকেরা সমাজের দর্পণ। এধরনের ঘটনা কোন জনপ্রতিনিধির থেকে আমরা কাম্য করিনা। উপজেলা প্রশাসন তার জায়গা থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বার্তাবাজার/এম আই